পাবনায় করোনার টিকা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

পাবনায় করোনার টিকা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

ফাইল ছবি

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার সর্বত্রে এখন টিকা নিতে চরম ভিড়ের কারণে কর্তৃপক্ষকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তবে এসব স্থানে স্বাস্থ্যবিধি সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষিত। পাবনা জেনারেল হাসপাতাল, স্কুল স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে যাওয়া মানুষের ভিড়ে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি ) দুপুর পৌনে একটায় জেলা শহরের স্কুল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দেখা যায় আদর্শ গার্লস্ হাই স্কুলের প্রায় দেড়শ’ ছাত্রীর লাইনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ ঘোষণা হলো। ‘এখন আর টিকা দেয়া হবে না। তিনটাই আবার শুরু হবে। এই ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা হৈচৈ শুরু করে বলতে থাকে, ‘ততক্ষণ আমরা কী করবো?’এমন ঘোষণার পর নিকটস্থরা লাইনেই থাকলেন আবার অনেকে রাগ করে চলেই গেলেন। প্রশ্ন করা হয় সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে কেন এই বিরতি। ‘সাফ জবাব দেয়া হয় এখন লান্সের টাইম।’ পর্যায়ক্রমে লান্স কী করা যেত না? নিয়মানুযায়ী পৌনে এক ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা লান্সের টাইম। কেন দু’ঘন্টা পর্যন্ত আপনারা লান্স করবেন-আর শিক্ষার্থীরা ততক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে? এর কোন সদুত্তর পাওয়া গেল না। টিকা নিতে আসা প্রার্থীদের ততক্ষণ লাইনেই অপেক্ষায় থাকতে হলো। 

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ফলে টিকাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিল না বললে চলে।   টিকা নিতে আসা বিপুলসংখ্যক মানুষকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। তবে সেখানে সকাল সাতটা থেকে টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে।

সরেজমিন সকাল ১০টায় গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কক্ষে টিকা দেয়া হচ্ছে। কক্ষ থেকে শুরু হওয়া লাইন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাঠ থেকে প্রধান ফটকের বাইরে চলে গেছে। বাইরে ও সামনের সড়কেও একশ’  থেকে দেড়শ’ মানুষের দীর্ঘ লাইন। সব মিলিয়ে অন্তত: প্রায় দেড় হাজার মানুষ টিকা নিতে এই কেন্দ্রে এসেছেন। এ সময় বেশির ভাগ মানুষের মুখেই মাস্ক ছিল না। সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারেও উদাসীনতা দেখা যায়। কেন মাস্ক ব্যবহার করছে না এমন প্রশ্নের জবাবে কয়েকজন বলেন, প্রচন্ড ভিড়ের কারণে মাস্ক মুখে রাখতে সমস্যা হচ্ছে।

লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা হলে তাদের মধ্যে  কেও জানালেন, তারা টিকার জন্য  রেজিস্ট্রেশন করেছেন বেশ কিছুদিন আগে। কিন্তু কোনো এসএমএস পাননি। তারপরও এসেছেন টিকা নিতে।

তাদের কথা এসএমএস’র জন্য আর কতদিন অপেক্ষা করবো?

টিকাদান কক্ষের সামনে বেশ বড় জটলা দেখা যায়। সেখানে পেছন থেকে কয়েকজন ব্যক্তি কক্ষের ভেতরে  ঢোকার চেষ্টা করলে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের সঙ্গে তাদের বাগবিতন্ডা হয়।

টিকা নিতে আসা দিপালী বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৮টায় এসেছিলাম। একটু আগে টিকা দিতে পারলাম। তবে ব্যাপক ভিড়, ধাক্কাধাক্কি; একটু ব্যবস্থাপনার অভাব বোধ করলাম।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খান বলেন,‘স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। প্রথম দিকে মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও এখন প্রতিদিন ১ থেকে দেড় হাজার মানুষ টিকা নিচ্ছেন। প্রতিদিন এত মানুষকে টিকা দিতে গিয়ে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। সরকারের কড়া ঘোষণায় জনগণের এখন কানে পানি ঢুকেছে।’