প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে স্বাগত জানিয়েছে আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ নব গঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোববার এক বিবৃতিতে সদ্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অপর চার কমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আমাদের প্রস্তাবিত নাম বাদ পড়লেও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠিত হওয়ায় আমরা সস্তুষ্ট। গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নব গঠিত নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছে এবং নির্বাচন কমিশনের সকল কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে এতে আশা প্রকাশ করা হয়। ওবায়দুল কাদের রোববার গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে দেশবাসীর নিকট আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংবিধানের আলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। তারই ফলশ্রুতিতে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন’-২০২২ প্রণিত হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

ওয়াদুল কাদের বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবেন এটাই জনগণের প্রত্যাশা। আমরা আশা করি, নব গঠিত নির্বাচন কমিশনের সম্মানিত সদস্যগণ তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন। দেশের মানুষ যাতে ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশনে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই কর্মজীবনে দক্ষতা, সততা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে সুনামের সাথে কাজ করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তারা অতীতে যে যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখিয়েছেন, ভবিষ্যতেও সেভাবে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শুধু রাজনৈতিক ফায়দার জন্য এই কমিশনকে নিয়ে কোনো প্রকার অযৌক্তিক ও বিতর্কিত মন্তব্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত না হয়ে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। চলমান গণতান্ত্রিক ধারবাহিকতা বজায় রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই কমিশন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে সক্ষম হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

তিনি আরো বলেন, দেশের জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন হয়েছে এবং সে আইন অনুসরণ করেই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতির ইতিহাসে এটি একটি অনন্য মাইলফলক। শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও সংবিধানকে সমুন্নত রাখতে জাতির অভিভাবক হিসেবে এ আইন প্রণয়নে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট ছিলেন।

বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রের রীতিনীতি অনুসরণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে এমন আশা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে সংবিধান অনুযায়ী আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এই কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচনসমূহ যাতে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেজন্য রাজনৈতিক দলসমূহকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে অন্যান্য সকল রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজ সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতারা নির্বাচন কমিশন নিয়ে চিরাচরিতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নেতিবাচক ও বিভ্রান্তকর বক্তব্য অব্যাহত রেখেছেন।

বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই, তারা এটি মানেন না।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিএনপি’র প্রতি দেশের জনগণের কোনো প্রকার আগ্রহ নেই এবং তারা সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত একটি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ফলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে ভয় পায়। তাদের লক্ষ্য নির্বাচন নয়, হত্যা-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণ তাদেরকে বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপিকে এদেশের জনগণ কেন ভোট দেবে? তাদের নেতা কে? দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কী প্রধানমন্ত্রী হতে পারে? তাদের প্রধান দুই নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।

তিনি বলেন, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সাজাপ্রাপ্ত আসামি তো নির্বাচন করতে পারে না। তাহলে কার নেতৃত্বে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? এ প্রশ্নের উত্তর বিএনপি জানে না। তাই বিএনপি’র দণ্ডপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতাদের নির্দেশেই তারা আজ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অতীতে ক্ষমতায় এসে জনগণের কোনো কল্যাণ করেনি। দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি। তারা দেশ পরিচালনার নামে দেশের মানুষের ওপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে। হাওয়া ভবন খুলে জনগণের সম্পদ লুটপাট করেছে এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি বার বার দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। সংবিধানকে হত্যা করেছে। গণতন্ত্রের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করেছে। সংবিধানকে বার বার ভূলুণ্ঠিত করে অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখল করেছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং গণ রায়কে উপেক্ষা করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য বার বার ষড়যন্ত্র করেছে। বিএনপি কখনো নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করে নাই। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই সংবিধান ও আইনের বিধি-বিধান ভূলুণ্ঠিত করে অসাংবিধানিক পন্থায় জনগণকে জিম্মি করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের মজ্জাগত অভ্যাস অনুযায়ী পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য উন্মাদ ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য বিএনপি এতই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে, জনগণ কর্তৃক বারবার ধিকৃত হওয়ার পর তারা এখন বিদেশী প্রভুদের ওপর ভর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চায়।

তিনি বলেন, মিথ্যা, অপপ্রচার ও গুজব চালিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে দেশের চলমান অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চায়।

আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মী দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। আমরা সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু মেয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাব। জয় আমাদের হবেই।

সূত্র : বাসস