‘আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না’, ছোট ভাইকে বলেছিলেন হাদিস

‘আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না’, ছোট ভাইকে বলেছিলেন হাদিস

‘আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না’, ছোট ভাইকে বলেছিলেন হাদিস

ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে রাশিয়ার রকেট হামলায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের মৃত্যুতে পরিবারে চলছে আহাজারি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান হাদিসকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা আর বেহুঁশ মা।

বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে বাংলাদেশী জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’তে রকেটে করে বোমা হামলা চালায় রাশিয়া। এতে জাহাজে থাকা মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হন। তিনি ওই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

জানা যায়, এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া আরিফ চট্টগ্রাম মেরিন অ্যাকাডেমির ৪৭তম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। লেখাপড়া শেষ করে তিনি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি নেন।

ইউক্রেনে জাহাজটি আটকে পড়ার পর থেকেই তার পরিবারের সবার দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে দিন কাটছিল। নানা শঙ্কার মধ্যে ছিলেন তারা। তাদের সেই শঙ্কাই সত্যি হলো। সন্তানের লাশ ফেরা নিয়ে এখন আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘ হাদিস এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটিতে পাঁচ বছর যাবৎ চাকরি করছিলেন ‘

নিহত হাদিসের ছোট ভাই মো. তারেক বলেন, বুধবার সকালেও ভাই আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সময়ে ফোনে বলেন, ‘ভাই আমাদের আর ভাঙা ঘরে থাকতে হবে না। বাড়িতে এসেই যেভাবে হোক ঘরের কাজ ধরবো।’

ফোনালাপে ইউক্রেনে বোমা, গুলির শব্দ ও যুদ্ধের অবস্থা নিয়েও কথা হয়। ভীতিকর পরিস্থিতি নিয়ে হাদিস শঙ্কিত ছিল বলেও জানান তিনি। বাড়ি ফেরার তাড়া অনুভব হয়েছিল তার কথায়। বাড়ি ফিরে কী কী কাজ করবে, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে তার একটি আলোচনাও করেন।

তারেক আরো বলেন, ‘আমরা জাহাজে থাকা আরিফের সহকর্মীদের কাছেই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছি। এরপর থেকেই আমার বাবা বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছেন, মা বেহুঁশ।'

তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ করেন, 'যাতে দ্রুত তার ভাইয়ের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।’

উল্লেখ্য, সিরামিকের কাঁচামাল ‘ক্লে’ পরিবহনের জন্য জাহাজটি তুরস্ক থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় পৌঁছায়। তবে যুদ্ধাবস্থা এড়াতে জাহাজটিকে সেখানে পৌঁছানোর পরই পণ্য বোঝাই না করে দ্রুত ফেরত আসার জন্য নির্দেশনা দেন শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তারা। শেষ মুহূর্তে বন্দরের পাইলট না পাওয়ায় ইউক্রেনের জলসীমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশের এই জাহাজ।

সূত্র : ইউএনবি