ফুসফুস পুড়ায় এদেশে টাকা পাচার করে বিদেশে

ফুসফুস পুড়ায় এদেশে টাকা পাচার করে বিদেশে

দেশীয় শ্রমিকবান্ধব বিড়ি শিল্প ধংসে বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ

দেশীয় শ্রমিকবান্ধব বিড়ি শিল্প ধংসে বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিড়ি শ্রমিক ইউনিয়ন ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এর সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে আগামী বাজেটে বিড়িতে শুল্ক কমানো, বিড়ির উপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, বিড়ি শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে বিড়ি কারখানার লাইসেন্স না দেওয়া এবং কাস্টমস্ কর্তৃপক্ষকে নকলবাজদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান শ্রমিকরা। এসময় মানববন্ধনে পুলিশ বাধা দেয় মানববন্ধন শেষে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এর মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শ্রমিক নেতারা।

বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত লাবলু, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পে দেশের অসহায়, হতদরিদ্র, স্বামী পরিত্যক্তা, নদী ভাঙ্গন কবলিত জনগন, শারীরিক বিকলঙ্গসহ লক্ষ লক্ষ সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। অথচ বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি ধ্বংস করা হচ্ছে। এদেশীয় কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর কাছে সুবিধা পেয়ে বিড়ির উপর মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিড়ি মালিকরা এই মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে শ্রমিকরা বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়াও বিড়ির উপর শুল্ক বৃদ্ধি হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিতে জালব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোলবিহীন নকল বিড়ি তৈরি করে বাজারজাত করছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

বক্তারা আরো বলেন, ‘বিদেশী বহুজাতিক কোম্পানীর সুবিধাভোগী দেশীয় অসাধু কর্মকর্তরা সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে অনলাইনের মাধ্যমে বিড়ি কারখানার লাইসেন্স দিয়ে প্রকৃত শুল্ক প্রদানকারী বিড়ি মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানী এদেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। এছাড়া সিগারেটে অগ্রীম আয়কর ৩ শতাংশ আর সেখানে বিড়িতে অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ। বৈষম্যমূলক অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারসহ দেশীয় বিড়ি শিল্প নিয়ে সব ধরনের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা না হলে আমরা তীব্র আন্দোলন সংগ্রামে যেতে বাধ্য হবো। একই সাথে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মতো বিড়ি শ্রমিকদের কল্যাণে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করার জোর দাবি জানান শ্রমিকরা।’