সুজানগর আ.লীগের দ্বন্দ্ব ঃ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বিচার দাবী করলেন সাধারণ সম্পাদক

সুজানগর আ.লীগের দ্বন্দ্ব ঃ সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বিচার দাবী করলেন সাধারণ সম্পাদক

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ। অতি সম্প্রতি স্থানীয় দলীয় এক নেতা ও সুজানগর  পৌরসভার কর্মচারী আল আমীন হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলীয় শৃংখলা সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে পড়েছে সুজানগর আওয়ামীলীগে।
উপজেলা সভাপতি আব্দুল ওহাবের সংবাদ সম্মেলনের তিনদিরে মাথায় দলের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন এবার দলীয় চার নেতাকর্মী খুনের সরাসরি মদদদাতা উল্লেখ করে বিচার দাবী করলেন। বিষয়টি নিয়ে সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের  নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। 
শুক্রবার (২৫ মার্চ ) বেলা পৌনে ১২টায় পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল ওহাবকে নৌকা বিরোধী ও দলীয় নেকাকর্মীর স্বার্থ বিরোধী ব্যক্তি চিহিৃত করে অবিলম্বে দলীয় সভানেত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। 
সুজানগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক ১৪ মার্চ আল আমীনকে হত্যা করা হয়েছে। এর আগের দিন ১৩ মার্চ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মিটিং করা হয়। প্রমাণ স্বরূপ মিটিং-এর চিত্র সাংবাদিকদের কাছে প্রদর্শন করা হয়। তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন,২০০৪ সালে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিনুল হক বাক্কু, ২০১০ সালে যুবলীগ কর্মী বক্কার, ২০২১ সালে ভায়রার সবুজ এবং সর্বশেষ চলতি কছরের ১৪ মার্চ আল আমীন হত্যা কান্ডের সাথে সভাপতি আব্দুল ওহাব ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা জড়িত। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় আব্দুল ওহাব ২১ মার্চ র্সবাদ সম্মেলনে মামলা এজাহারভূক্ত যে সব সব নেতৃরৃন্দের না উল্লেখ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, ধর্ষণ, অস্ত্র, চাঁদাবাজী, মাদক মামলাসহ বিভিন্ন ফৌদারী মামলা বিদ্যমান। মামলার কপিসমূহ সাংবাদিকদের সরবরাহ করা হয়। 
তাই সভাপতি আব্দুল ওহাবের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাতীত বলে আখ্যায়িত করেন।  তিনি সন্ত্রাসীদের উপর ভর করে রাজনীতি করেন। পৌর কর্মচারী আল আমিনকে খুনের নেপথ্যে মদদদাতা হিসেবে আব্দুল ওহাবকে দায়ী করে বলেন, আব্দুল ওহাব মেয়র থাকা অবস্থায় নিহত আল আমিনকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। যারা আসামী হয়েছেন তারা সবাই ওহাবের নির্দেশে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। হত্যা মামলার আসামীদের সঙ্গে ওহাবের একাধিক ছবি রয়েছে বলে তিনি তা প্রদর্শন করেন।
তিনি আরও বলেন, সুজানগর পৌরসভার টিকাদান সহকারি আল আমিন হত্যার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির ও তাকে দায়ী করে গত ২১ মার্চ উপজেলা আ. লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব যে সংবাদ সম্মেলনে করেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ সময় অন্যান্যর মধ্যে সুজানগর পৌর মেয়র ও উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক  রেজাউল করিম রেজা, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম যুবলীগ নেতা সাইদুর রহমান সাইদ, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার, উপজেলা আ.লীগের প্রচার সম্পাদক রবিউল হক টুটুল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজা হাসান, ইউনুস আলী বাদশা, সদস্য মাহমুদ্দুজ্জামান মানিক প্রমুখসহ বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।  
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৪ তারিখ পাবনা শহর থেকে ফেরার পথে সদর উপজেলার সাদুল্লাহপুর নামক স্থানে সুজানগর পৌরসভার টিকাদান সহকারী আল আমিন দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন। এ ঘটনায় আতাইকুলা থানায় সুজানগরের দলীয় পদধারীসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 
যার মধ্যে ২৬ জনই সভাপতির নেতাকর্মী বলে দাবি করেন সভাপতি আব্দুল ওহাব।