সুনামগঞ্জে হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে হু হু করে ঢুকছে পানি

সুনামগঞ্জে হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে হু হু করে ঢুকছে পানি

সুনামগঞ্জে হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে হু হু করে ঢুকছে পানি

বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় একটি হাওরের বাঁধ ভেঙ্গে হু হু করে পানি ঢুকছে। উপজেলা প্রশাসন বলছেন অধিকাংশ ধানই ইতোমধ্যে কৃষকরা তুলে ফেলতে পেরেছেন।

জেলার নদ নদী ও অন্য হাওরের পানি বৃদ্ধির মধ্যেই বাঁধটি ভেঙ্গে গেলো অথচ এ বাঁধটি এবার বোরো মৌসুমে সংস্কার করা হয়েছিলো। বাংলাদেশে বোরো মৌসুম শুরু হয় বাংলা কার্তিক ও ইংরেজি অক্টোবর নভেম্বর মাসে।

শাল্লার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু তালেব বলছেন উপজেলার বাহারা ইউনিয়নে বাঁধের যে অংশ নিয়ে তারা চিন্তিত ছিলেন সেখানে না ভেঙ্গে একটি ভালো অংশে ভেঙ্গে গেছে।"গতকাল তিন ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় ও বজ্রপাত হয়েছে। সে সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে। লোকজন ছিলো না, ফলে কেন ভালো জায়গাটায় ভেঙ্গে গেলো বুঝতে পারছি না," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন বাঁধ ভাঙ্গলেও উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই কারণ এ হাওর এলাকায় থাকা জমির ৯৫ ভাগ ধান ইতোমধ্যেই কৃষকরা তুলে ফেলেছেন।জানা গেছে এ হাওর এলাকায় মোট ৪ হাজার ৬৩৭ একর জমিতে ধান ছিলো যার মধ্যে ৪ হাজার ৪০৫ একর জমির ধান তুলে ফেলেছে কৃষকরা।

আর কী পরিমাণ পানির নিচে আছে সেটি জানতে এখন জেলা কৃষি বিভাগ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি অফিসের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম।তবে এই হাওরের বাঁধ ভাঙ্গলেও জেলার অন্য কোন হাওর এলাকার জমির ক্ষতির কোন আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।"আমরা বিকেল নাগাদ বুঝতে পারবো কতটা ধান এখনো পানির নীচে আছে। আর এ পানির ঢল নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি হয়ে কিশোরগঞ্জের দিকে চলে যাবে। এখানকার আর কোন অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হবে না," বলছিলেন তিনি।

ফসল কাটার বার্তা ছিলো আগেই

মূলত ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার কারণে চলতি মাসের শুরুতেই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিলো যে পানির ঢল বাংলাদেশের হাওর এলাকায় আসতে শুরু করবে।এই বার্তা পেয়ে কৃষকদের সব পাকা ফসল দ্রুত তুলে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ এবং একই সাথে আগের দফার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করেছিলো।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা তখন বলেছিলেন যে দেশে ৯৫টি হাওর আছে এবং এর মধ্যে ৪৩টি হাওরের বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে।এর আগে মার্চ মাসেই সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ বেশ কিছু হাওর এলাকা তলিয়ে গিয়েছিলো বন্যার পানিতে।

ওই ঢলে প্রায় ৪হাজার ৩শ একর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। দেশে হাওর এলাকার প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার একর জমিতে এবার ধানের চাষ হয়েছে।তবে নতুন করে পূর্বাভাস পেয়ে কিছু এলাকায় মানুষজন নিজ উদ্যোগে বাঁধ ঠিক করার চেষ্টা করছে এমন খবরও এসেছে গণমাধ্যমে।

এর মধ্যে বেশ কিছু বাঁধের পানির অবস্থান বিপজ্জনক অবস্থায় ছিলো এবং কোথায় কোথায় অল্প অল্প করে পানি ভেতরে প্রবেশ করছিলো।এর মধ্যেই অনেক জায়গায় বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।তবে শাল্লায় যেখানে বাঁধ ভেঙ্গেছে সেখানে বাঁধ ভাঙ্গতে পারে এমন ধারণাই কারও ছিলো না।

সূত্র :বিবিসি