ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা জোরদার করছে রাশিয়া

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা জোরদার করছে রাশিয়া

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হামলা জোরদার করছে রাশিয়া

ইউক্রেনের শহর খেরসন রাশিয়ার দখলে যাওয়ার পর সেখানে রোববার থেকে রাশিয়ার মুদ্রা রুবল ব্যবহার করতে শুরু করেছে রুশ সমর্থিত বাহিনীগুলো।

তবে রাশিয়া কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ইউক্রেনিয়ান মেয়র আইহোর কোলিখায়িভ মনে করেন, এই চেষ্টা সফল হবে না। কারণ খেরসনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, রাশিয়ার সাথে নয়।এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের ৬৬তম দিনে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে নতুন করে আক্রমণের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া।

‘রাশিয়ার সৈন্যরা এখন পর্যায়ক্রমে পূর্ব ইউক্রেনে তাদের হামলার ব্যাপকতা বাড়াচ্ছে’, জানাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেকসান্দার মোৎযিয়ানিক।‘হামলাকারীরা আরো বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইশারা পাওয়া যাচ্ছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব যেসব এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাশিয়া ব্যর্থ হয়েছে, সেখান থেকে সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে রাশিয়া এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলে শক্তি বাড়াচ্ছে।তবে রাশিয়া দাবি করেছে, তাদের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ পুরোপুরি তাদের ‘পরিকল্পনা মতোই’ এগোচ্ছে।

মানববর্ম হিসেবে লড়াই করতে প্রস্তুত ইউক্রেনের নারীরা

ইউক্রেনের মারিউপোলের স্টিল কারখানায় প্রতিরোধী যোদ্ধাদের একটি দল আটকে রয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা শহরের সর্বশেষ প্রতিরোধ এলাকাটি ঘিরে ফেলেছে।

আটকেপড়া যোদ্ধাদের উদ্ধার করে আনার দাবিতে শত শত নারী কিয়েভের রাস্তায় নেমে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এই নারীরা আটকে পড়া যোদ্ধাদের স্ত্রী, বোন অথবা মা।তারা বলেছেন, নিরাপদে তাদের সরিয়ে আনতে প্রয়োজন হলে তারা নিজেদের মানববর্ম হিসাবে ব্যবহার করতে রাজি আছেন।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশিরভাগ দেশে যারা বাস করেন, তারা হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বক্তব্য শুনে বিভ্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। রাশিয়া যেখানে দাবি করেছে যে, তারা মানুষকে সুরক্ষা দিতে এই যুদ্ধ শুরু করেছে এবং তারা পশ্চিমা দেশগুলোর আগ্রাসনের শিকার।

তবে এই বক্তব্যে যে শুধু রাশিয়ারাই বিশ্বাস করে, তা হয়তো নয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪১টি দেশ ভোট দিয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের দেশগুলোর চারভাগের একভাগ হয় ভোট দেয়া থেকে বিরত থেকেছে অথবা বিপক্ষে ভোট দিয়েছে।বিবিসির নিরাপত্তা বিষয়ক বিশ্লেষক ফ্রাঙ্ক গার্ডনার এটির ব্যাখ্যা করে বলছেন, ‘ন্যাটোর মতো সারা পৃথিবীর দেশগুলোও মনে করে, এই ভয়াবহ যুদ্ধের জন্য রাশিয়াই একমাত্র দায়ী - পশ্চিমা নেতাদের এমন চিন্তা হয়তো ঠিক নয়।’

যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের পাল্টা জবাব রাশিয়ার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র জন কিরবি গত শুক্রবার একটি সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে বলেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই তিনি ইউক্রেনে হামলা করেছেন।ওই মন্তব্যের পাল্টা জবাবে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ বলেছেন, ওই মুখপাত্র এখন আজেবাজে কথার আশ্রয় নিচ্ছেন।

‘এটা এখন খুব নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, (মার্কিন) প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মিথ্যা বক্তব্যের ওপর নির্ভর করে কথা বলছেন’ - তিনি বলেছেন।উভয় পক্ষের উত্তেজনাকর বক্তব্যের মধ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি