দীর্ঘ যাত্রায় করনীয়

দীর্ঘ যাত্রায় করনীয়

মেহেরুন নেসা

যেকোন ধরনের দীর্ঘ যাত্রায় সেটা হোক বিমান, বাস, বা ট্রেন, শরীরে ভ্রমন ক্লান্তিতো নিয়ে আসেই, সাথে সাথে তৈরি হয় আনুষঙ্গিক আরও অনেক স্বাস্থ্য জটিলতা। আমরা কিছুটা সচেতন হলে সহজেই এড়াতে পারি এধরনের সমস্যা ।

  • দীর্ঘ যাত্রার যে সকল সমস্যা দেখা যায়ঃ

  •  ডিভিটিঃ  দীর্ঘ সময় বসে থাকার ফলে রক্ত সঞ্চালনের স্বল্পতা থেকে পা ব্যথা, পা ফুলে যাওয়া সহ তৈরি হতে পারে ডিপ ভেইন থ্রমবোসিস (ডিভিটি) যা অবহেলা করলে পালমোনারি এম্বলিজম পর্যন্ত হতে পারে।
  • পা ঝিমঝিম ও অবশ হওয়া, কোমর ব্যথা, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি।
  • ব্লেটিংঃ যারা দীর্ঘ সময়  বিমানে যাতায়াত করেন তাদের এটি দেখা দেয়। কেবিনে বায়ু চাপ কম থাকার কারনে অনেকের পেটে গ্যাস, পেট ব্যথা, কুষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দেখা দেয়।
  • জেট ল্যাগঃ এটি এক ধরনের ঘুমের ব্যাঘাত জনিত সমস্যা। যারা একই দিনে বিভিন্ন টাইম লাইনে বিমান ভ্রমন করেন তাদের মাঝে এই সমস্যাটি দেখা দেয়।
  • কী করনীয়ঃ

  • সোজা হয়ে কাঁধ সোজা রেখে পা দুটো মেঝেতে সমতলে রেখে বসার অভ্যাস করুন। একটি পায়ের উপর আরেকটি পা ক্রস করে অথবা মেরুদন্ডকে বাঁকিয়ে বসবেন না।
  • প্রতি ৩০ মিনিট পর  কিছু সময়ের জন্য দাঁড়িয়ে একটু নড়াচড়া করুন অথবা সম্ভব হলে একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে এবং আপনি পা ফুলা, ব্যথা, ডিভিটি ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাবেন।
  • যেকোন ধরনের ভ্রমনের সময় প্রচুর পরিমানে পানি, শরবত ইত্যাদি পান করুন এবং কফি ও অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বর্জন করুন। সম্ভব হলে পুদিনা পাতা যুক্ত চা পান করুন এবং পেটে গ্যাস তৈরি করে এমন ধরনের খাবার ভ্রমনের সময় বর্জন করুন।
  • ভ্রমনের সময় অবশ্যই লম্বা কম্প্রেশন মোজাসহ আরামদায়ক জুতা পরিধান করুন যা সহজে আপনি পরতে ও খুলতে পারবেন।
  • কিছু ব্যায়ামঃ

সিটে বসে আপনি কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। এতে আপনি ডিভিটি তৈরি হওয়া থেকে মুক্তি পাবেন। যেমনঃ 

  • এ্যাঙ্কেল সার্কেল বা পায়ের গোড়ালি ঘুরানোঃ

পা সোজা করে বসে গোড়ালি সহ পায়ের পাতা সামান্য

উপরে তুলে পায়ের পাতা সামনে পিছনে এবং বৃত্তকারে

ঘুরান এটি প্রতি ঘন্টায় ৩০ সেকেন্ড করুন।

  • ফুট পাম্পসঃ সোজা হয়ে বসে একবার গোড়ালি মেঝেতে 

রেখে পায়ের পাতা সহ আঙ্গুল উপরে উঠান এবং নামান।

এবার গোড়ালি উপরে উঠান নামান এটি ছন্দাকারে

প্রতি ঘন্টায় ৩০-৪০ সেকেন্ড করুন।

  • হাটু উঠানামা বা নী লিফ্টঃ হাত রানের উপর রেখে হাটু 

ভাঁজ করে বুক বরাবর এক পা করে উঠান এবং নামান।

এটিও প্রতি ঘন্টায় ২০-৩০ বার করতে পারেন।

মেহেরুন নেসা

ফিজিওথেরাপী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও গবেষক

ফাউন্ডার ডিরেক্টর, এম.পি আর.সি, ঢাকা।