শ্রীলঙ্কার রাজপথে ‘আদানি হটাও’ আন্দোলন

শ্রীলঙ্কার রাজপথে ‘আদানি হটাও’ আন্দোলন

ছবি: সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার রাজপথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিবিরোধী ‘আদানি হটাও’ আন্দোলন দেখা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কলম্বোর রাস্তায় বিক্ষোভ সমাবেশে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক শ' স্থানীয় মানুষ। তাদের হাতে সিংহলি ও ইংরেজিতে লেখা প্ল্যাকার্ডে স্পষ্ট বার্তা- ‘আদানিকে আমরা চাই না।’ বিক্ষোভকারীদের দাবি, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে একটি ‘সন্দেহজনক’ চুক্তি করেছেন। মান্নারে একটি ৫০০ মেগাওয়াটের সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ গৌতম আদানিকে পাইয়ে দেয়া সেই ‘সন্দেহজনক চুক্তি’রই অংশ।

অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক সময়ে কলম্বোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। প্রথমে সিলোন ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান এমএমসি ফার্দিনান্দো দাবি করেন, ভারতীয় শিল্পপতি আদানিকে একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প পাইয়ে দিতে মোদি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের উপরে চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। পরে অবশ্য ওই বিবৃতি থেকে সরে আসেন ফার্দিনান্দো। পদ থেকে ইস্তফাও দেন। অবশ্য গোতাবায়ার দাবি, পড়শি দেশের রাষ্ট্রনেতা তাকে কোনো চাপ দেননি। নয়াদিল্লিও এ নিয়ে মুখ খোলেনি।

কিন্তু চুপ নেই শ্রীলঙ্কার মানুষ। ‘পিপলস পাওয়ার’ নামের একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের ডাকে বৃহস্পতিবার কলম্বোয় প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। বিক্ষোভে যোগ দিতে মান্নার থেকে কলম্বো এসেছিলেন নাজলি হামিম নামে এক ইঞ্জিনিয়ার। একটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে ফোনে তিনি বলেন, ‘কোনো রকম দরপত্র ছাড়াই আদানি গোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দিতে দেশের বিদ্যুৎ আইন পাল্টে ফেললেন গোতাবায়া রাজাপাকসে।'

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য গত কয়েক দিন ধরে নানা বার্তা ঘুরেছে বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে। প্রচার হয়েছিল, আজ ২টার সময়ে শহরের ম্যাজেস্টিক সিটির সামনেসমাবেশ হবে। বিক্ষোভকারীরা যেন সেখানে জড়ো হন।

বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন অর্থনীতির শিক্ষার্থী অঞ্জনী ওয়ান্ডুরাগালা। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সন্দেহজনক চুক্তি সম্পর্কে দেশের দু'কোটি ২০ লাখ মানুষ সম্পূর্ণ অন্ধকারে। আমরা চাই, আমাদের দেশেও পরিবেশ-বান্ধব শক্তির উৎপাদন হোক। কিন্তু তা দুর্নীতির মাধ্যমে হতে পারে না।’

নাজলি হামিমও বলেন, ‘আমাদের দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ কাকে দেয়া হবে, তা দরপত্র ডেকে ঠিক করতে হবে। আমাদের দুঃসময়ে ভারত যা করেছে, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা দেশকে শোষণ করে এ ধরনেরচুক্তি করছে।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা