মানব পাচার বন্ধে বাংলাদেশের অবস্থান, যা জানাল মার্কিন প্রতিবেদন

মানব পাচার বন্ধে বাংলাদেশের অবস্থান, যা জানাল মার্কিন প্রতিবেদন

ছবি: সংগৃহীত

মানব পাচার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনের র‌্যাংকিংয়ে তৃতীয়বারের মতো একই জায়গায় অবস্থান করছে বাংলাদেশ। তবে এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা রয়েছে।

মঙ্গলবার ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস রিপোর্ট’ শীর্ষক যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মানব পাচার রোধে ন্যূনতম যা করা প্রয়োজন, তা পুরোপুরি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

 

প্রতিবেদনে এবারও তিনটি ধাপে দেশগুলোর পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সুরক্ষা আইনের (টিভিপিএ) বিষয়গুলোকে ভিত্তি হিসেবে ধরে ধাপগুলো তৈরি করা হয়েছে।

 

মানব পাচার বন্ধে যেসব দেশ টিভিপিএর ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে পেরেছে, সেগুলোকে প্রথম ধাপে রাখা হয়েছে। আর সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ধাপে রাখা হয়েছে। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা রয়েছে দ্বিতীয় ধাপে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য, বাংলাদেশসহ এসব দেশ মানব পাচার বন্ধে ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে না পারলেও তাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। তারা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তবে যারা পাচার বন্ধে উল্লেখযোগ্য কোনো চেষ্টা চালাচ্ছে না সেসব দেশকে শেষ ধাপে রাখা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তি প্রদানে সরকারের প্রচেষ্টা বেড়েছে। এ ঘটনায় একজনের সংসদ সদস্য পদ বাতিল বহাল রয়েছে। মানব পাচারের বিচারে ২০২১ সালের আগস্টে সাতটি ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। এ ছাড়া জোরপূর্বক শ্রমে বাধ্য করার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে সরকার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) শ্রম কনভেনশনের প্রটোকল অনুসমর্থন করেছে।

যদিও  বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ টিভিপিএর ন্যূনতম মান প্রতিপালন করতে পারেনি বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে । 

বলা হয়েছে, আগের বছরের তুলনায় পাচারের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়েছে। পাচারের শিকার ব্যক্তিদের সেবায় ঘাটতি রয়েছে। রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিগুলোর অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর বাড়তি ফি নেওয়ার সুযোগ এখনো রয়েছে। অবৈধভাবে শ্রমিক পাঠানো প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

পাচারের শিকার রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসেবে যুক্ত হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্ন করা হয় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কর্মকর্তাদের। 

তারা বলেন, বাংলাদেশ থেকে বা বাংলাদেশের দিকে কত মানুষ পাচারের শিকার হয়, তা নয়; বরং সমস্যা মোকাবেলায় সরকার কী করছে, তা প্রতিবেদনে আসে। সমস্যার পরিধি বা সংখ্যা নিয়ে প্রতিবেদনে আমরা আলোচনা করি না। সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং সরকারের করার জন্য আমাদের কী কী সুপারিশ আছে - এসবই উঠে আসে প্রতিবেদনে। রোহিঙ্গাদের পাচার রোধের জন্য আইওএমসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ প্রতিবেদনে আসে। আমরা যেহেতু সংখ্যার হিসাব করি না, সেহেতু রোহিঙ্গাদের সংখ্যার বিষয় এখানে প্রযোজ্য নয়।’