হলের সিট নিয়ে রাতে ইবি ছাত্রলীগে দফায় দফায় হট্টগোল-মারামারী
ছবি- নিউজজোন বিডি
ইবি প্রতিনিধি :হলে শিক্ষার্থী তোলাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় মারামারী ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৪০৩ নম্বর কক্ষের একটি সিট নিয়ে হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই কক্ষের বৈধ দুই সিনিয়র শিক্ষার্থী বেশিরভাগ সময়ই ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করেন। ফলে ওই সিটে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থীকে তুলতে চান হল ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান। অন্যদিকে কক্ষে অবস্থান করা আরেক ছাত্রলীগকর্মী অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল ওই সিটে অতিথি হিসেবে দুইজনকে রেখেছেন। তাদেরকে তিনি ওই কক্ষে স্থায়ীভাবে তুলতে চান।
শনিবার রাত ১১টার দিকে মোস্তাফিজ ওই কক্ষে গিয়ে অতিথি হিসেবে থাকা শিক্ষার্থীদেরকে সিট খালি করে দিতে বললে বাঁধা দেন শাকিল। এ নিয়ে কক্ষের সামনে তাদের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়।
এ ঘটনার জেরে রাত তিনটার দিকে মোস্তাফিজ ও তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন কর্তৃক মাধররের অভিযোগ করেন শাকিল। শাকিলের অভিযোগ, রাতে হলের করিডরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মোস্তাফিজ এসে তাকে হুমকি ধামকি দেন। এক পর্যায়ে চড় থাপ্পড় দেন ও মারধর করেন। এসময় ছাত্রলীগকর্মী ইসতিয়াক আহমেদ শাওন, মিরাজুল ইসলাম, আশিক, রাসেল ও রাফি মোস্তাফিজের সঙ্গে থেকে মারধরে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ শাকিলের।
পরে লালন শাহ হল ও অন্যান্য হল থেকে আসা শাকিলের বন্ধুরা মোস্তাফিজের উপর চড়াও হলে তিনি লুকিয়ে পড়েন। এতে শাকিল ও তার বন্ধুরা ক্ষুব্ধ হয়ে কড়িডরে অবস্থান নেন ও বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকেন। এসময় ওই হল ও অন্য হল থেকে আসা ছাত্রলীগের সিনিয়ররা তাদেরকে শান্ত হতে বললেও তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাতে থাকেন। পরে ভোর সাড়ে চারটার দিকে ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খান ও আলামিন জোয়ার্দার এসে দিনের বেলায় বিষয়টি নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে জানালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
এরপরপই ঘটনাস্থলে আসেন সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম, মুর্শিদ আলম, শাহাবুব আলম ও শরিফুল ইসলাম জুয়েল। শাকিল তাদের নিকট অভিযোগ করলে দিনের বেলায় হল প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল বডি ও উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের আশ্বাস দিলে সবাই নিজ নিজ কক্ষে ফিরে যান।
এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ওই ব্লকের অন্য শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে ওই কক্ষের সিটের সিনিয়র শিক্ষার্থী না থাকায় শাকিল ও তার কয়েকজন বন্ধু কক্ষে নিয়মিত মাদক সেবন করে। তার বন্ধু সিনহা, জ্যোতি, বন্ধনসহ অন্য হল থেকে কয়েকজন এসে আসরে যোগ দেয়। আমরা এটি রোধে করতে নতুন একজনকে তুলতে চেয়েছিলাম। এতে ওদের আসর বসাতে সমস্যা হবে, এজন্য বাধা দেয়। একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডা হয়েছে। আর তিনটার দিকে চা খেয়ে উপরে আসার সময় আবার বাগবিতণ্ডা শুরু করলে বাকি ঘটনা ঘটে।
হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় প্রক্টরিয়াল বডি হলে এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা ১২টার দিকে হল প্রশাসন আলোচনা করব। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ছাত্রদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বসব। মাদক ও শৃঙ্খলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা অনেক কথাই বলি কিন্তু বাস্তবতা এমন যে, কোন কথাই কাজে আসে না।