কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাবি ছাত্রীর দাফন সম্পন্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাবি ছাত্রীর দাফন সম্পন্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাবি ছাত্রীর দাফন সম্পন্ন

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী রিক্তা আক্তারের (২০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার রাজশাহী থেকে ময়নাতদন্ত  শেষে রাত দশটার দিকে তার মরদেহ কুমারখালী জোতপাড়া নিজ বাড়িতে পৌঁছালে  মহেন্দ্রপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।রিক্তা আক্তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জোতপাড়া গ্রামে। তার স্বামী আব্দুল্লাহ ইসতিয়াক রাব্বি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে।

রাবি শিক্ষার্থী রিক্তা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ধরমপুর পূর্বপাড়ায় তার স্বামীর সাথে ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় শুক্রবার রাত ১২ টার দিকে রুমের জানালার গ্রিলের সাথে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রিক্তার বাবা বাদী হয়ে রাজশাহীর মতিহার থানায়  হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শনিবার  নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহতের বাবা লিয়াকত জোয়ার্দার অভিযোগ করে বলেন, মা আমার গত চার পাঁচ মাস কারো সাথে ভালো ভাবে কথা বলতো না,সব সময় মন খারাপ করে থাকতো, কি যে হয়েছিল ও জানে আর আল্লাহ জানে। তবে একথা সত্যি রাব্বি আমার মেয়েকে মারধর করে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে। কারন ওর শরীরের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিলো।

নিহত রিক্তার রাবির আইন বিভাগের দুই সহপাঠী মুজাহিদুল ইসলাম ও আহসান হাবীব জানান, রিক্তা অত্যন্ত ভদ্র প্রকৃতির মেয়ে ছিলো। পর্দা করে চলাফেরা করতো। শুক্রবার  মধ্য রাতে আমাদের কাছে খবর আসে রিক্তা সুইসাইড করেছে,মেডিকেলে যেয়ে দেখি রিক্তার স্বামী রাব্বি কান্নাকাটি করছে। রাব্বির কান্নার অভিনয় দেখেই আমাদের সন্দেহ হয় যে রিক্তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা সঠিক বিচারের দাবীতে রাবিতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।

এ বিষয়ে  রিক্তা আক্তারের ভাই এনামুল হক জানান, প্রায় তিন বছর আগে বাড়ি থেকে রিক্তার বিয়ের জন্য ছেলে দেখা হয়। তখন সে পরিবারকে জানায় কলেজের এক বন্ধুর সাথে তার সম্পর্ক আছে। সে বিষয়টা আমাদের এমনভাবে জানায় যে রাব্বির প্রতি রিক্তা কোনোভাবে দুর্বল। কোনোভাবে তাকে ফাঁদে ফেলেছে বলে ধারণা করেছিলাম। তাই আমরা বিষয়টি মেনে নেই এবং রাব্বির সাথে রিক্তার বিয়ে দেয়। কিন্তু এখন কীভাবে যে এমনটি হলো বুঝতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, রিক্তা কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। ওর ধ্যান-ধারণা, জ্ঞান অনেক বেশি। পরিবারের কোনো সমস্যা হলে রিক্তাই সবাইকে বোঝাতো। সেই মেয়ে কীভাবে আত্মহত্যা করবে?

এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ময়নাতদন্তের পর  মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাশ দাফনের জন্য কুমারখালীতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিহতের স্বামী ও তার বন্ধুকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে আশা করি খুব দ্রুতই সত্য উন্মোচন হবে।