ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : একদিকে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অন্যদিকে উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : একদিকে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অন্যদিকে উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : একদিকে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অন্যদিকে উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ

চাকরির দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুর দুইটায় প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবিস্থত কার্যালয়ের ফটক আটকে সামনে অবস্থান নেন তারা। এতে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে তারা রেজিস্টার ও উপ-রেজিস্টারের কার্যালয়ও আটকে দেন। একইসময়ে উপাচার্যের বাসভবনে একটি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড চলছিল বলে জানা গেছে।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ১০৭ জন কর্মচারী কাজ করে আসছেন। তাদের অধিকাংশই শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ শুরু করলেও পরে অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদের ব্যানারে চাকরি স্থায়ী করণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার উপাচার্যের কার্যালয় আটকে দিয়ে সামনে অবস্থান নেন তারা। এতে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) মনিরুজ্জামান মিল্টন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

এক পর্যায়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় উপস্থিত হয়ে শোকের মাসে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী হিসেবে এ ধরণের কর্মকা- বন্ধ করার আহবান জানান। এসময় তারা নিজেদেরকে ছাত্রলীগ নয় বরং কর্মচারী দাবি করে তাদের আহবান প্রত্যাখ্যান করেন। পরে নেতারা চলে যান। পরবর্তীতে সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম ও আমজাদ হোসেন উপস্থিত হয়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তাদের উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চালিয়ে যান কর্মচারীরা। এসময় তারা রেজিস্টারের কার্যালয় ও উপ-রেজিস্টারের কার্যালয়ও আটকে দেন।

পরে বেলা চারটায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত হয়ে আগামীকাল (৭ আগস্ট) তাদের বিষয় নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনার আশ^াস দিলে কর্মচারীরা অবরোধ তুলে নেন। এর আগে চাকরির দাবিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। সেদিনও উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করেন তারা।

অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান টিটু বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তরে সামান্য মজুরির বিনিময়ে কাজ করে আসছি। প্রশাসন আমাদের বিষয়ে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য বারবার আশ^স্ত করে শুধু সময় ক্ষেপন করছে। এরমধ্যে অর্ধশতাধিক কর্মচারীর বেতন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রেখেছে। আমরা আমাদের বেতন চালু করার দাবি নিয়ে আন্দোলনে এসেছি। সেই সঙ্গে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি এই বিবেচনায় আমাদের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে।’

এদিকে, পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরু হয়। বিভাগটিতে নতুন করে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। নিয়োগ বোর্ড চলাকালীন দিনমজুরদের এমন কর্মসূচি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক শিক্ষক।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু ছেলে তাদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের অফিসের সামনে এসেছিল পরে তারা নিজেদের মতো করে চলে গেছে। তাদের দাবির বিষয়গুলো স্যাররা দেখছেন।’

বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেন নি।