থানায় বিচার প্রার্থীকে মারধর : এএসআইয়ের পর ওসিও প্রত্যাহার

থানায় বিচার প্রার্থীকে মারধর : এএসআইয়ের পর ওসিও প্রত্যাহার

মানিকগঞ্জের শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শাহীন

মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় শিশুকন্যাকে ধর্ষণ চেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক বাবা নির্যাতনের ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শাহীনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সোমবার রাতে পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার দায় পুলিশ বাহিনীর নয়। পুলিশের যে সদস্য অপরাধ করেছেন তার দায় ওই সদস্যকেই নিতে হবে।

জানা গেছে, গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় শিবালয় থানায় গিয়ে শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে এক বাবার নির্যাতনের ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করা হয়।

থানার ভেতরে বিচার প্রার্থীর নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে শিবালয় থানার ওসি মো: শাহীনকেও মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করে মাদারীপুর জেলায় সংযুক্তি করা হয়। এছাড়া ওসি মো: শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অপু মোহন্তকে।

শিবালয় থানার ওসি মো: শাহীন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তিনি থানায় ছিলেন না। শুনেছেন ওই দিন সন্ধ্যায় এএসআই আরিফ হোসেন থানার ভেতরে এক ব্যক্তিকে মারধর করেছেন। এই ঘটনায় তাকে সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ থেকে মাদারিপুর জেলায় বদলী করা হয়েছে। তিনি সোমবার রাতেই শিবালয় থানার ওসি (তদন্ত) শেখ ফরিদ আহমেদের কাছে তার দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়েছেন।

অপর দিকে ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপু মোহন্ত বলেন, শিবালয় থানায় পুলিশ সদস্যের হাতে একজন মারধরের ঘটনায় তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করছেন।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সন্ধ্যায় শিবালয় থানায় কন্যাশিশু ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগ দিতে গিয়ে এএসআই আরিফ হোসেন ওই ব্যক্তিকে থানার ভেতরে পিটিয়ে আহত করেন।

ভুক্তভোগী ওই শিশুর বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা থাকেন দাদির কাছে। গত ২০ জুলাই রজ্জব খান নামে এক ব্যক্তি তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলে শিশুটির দাদি। পরে স্থানীয় সমাজপতিদের জানানো হলেও, প্রভাবশালী হওয়ায় কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না। উল্টো তাকেই নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো।

এরপর গত ১৪ আগস্ট শিবালয় থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থানা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে মা ও শিশু কন্যাকে সাথে নিয়ে থানায় যান তিনি। এ সময় থানার ওসি রুমে ছিলেন না। এএসআই আরিফ হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তাকে থানার ভেতর মারধর করা হয়। রাতে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবালয় সার্কেলে নূরজাহান লাবনীর নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
সূত্র : ইউএনবি