জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করতে চায় শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করতে চায় শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান

সংগৃহীত

শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে আগামীকাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৫তম আসরের। আগামী অক্টোবরে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের কথা মাথায় রেখে এবারের আসরটি সংক্ষিপ্ত র্ভাসনের ফরম্যাটে হচ্ছে। জয় দিয়ে এবারের এশিয়া কাপের মিশন শুরু করতে চায় ‘বি’ গ্রুপে থাকা শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান। এ গ্রুপের তৃতীয় দল বাংলাদেশ।  

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে। শ্রীলংকার বিপক্ষে আগামীকালের ম্যাচটি আফগানিস্তানের জন্য স্মরনীয় হতে যাচ্ছে। কেননা শততম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবে আফগানরা। 

চার বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়া কাপ। করোনাভাইরাসের কারনে ২০২০ ও ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়নি এশিয়া কাপ। অবশেষে এ বছর শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ। এবারের আসরটি হবার কথা ছিলো শ্রীলংকার মাটিতে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসছে এশিয়া কাপ। তবে এশিয়া কাপের আয়োজক থাকছে শ্রীলংকাই।

এবারের এশিয়া কাপ হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের কথা মাথায় রেখে, এমন পরিকল্পনা করেছে এশিয়া ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া আসরটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হয়েছিলো। 

২০১০ সালের পর স্বাগতিক হয়ে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ খেলার দারুন সুযোগ পেয়েছিলো শ্রীলংকা। নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২০১৪ সালের পর আবারও এশিয়া কাপ জয়ের সুযোগটা কাজে লাগাতো তরুণ দলটি। কিন্তু দুভার্গ্য শ্রীলংকার। দেশের রাজনৈতিক দুরবস্থার কারনে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পারছে না লংকানরা। তারপরও মরুর দেশের শিরোপা জয়ের জন্য অন্যতম ফেভারিট শ্রীলংকা। 

তবে টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলংকার সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আশানুরুপ নয়। গত টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় নেয় তারা। আর বিশ^কাপের পর তিনটি দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলে সবগুলোতেই হেরেছে লংকানরা। অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাঁচ ও তিন ম্যাচের সিরিজ এবং ভারতের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ হারে শ্রীলংকা। ১১টি ম্যাচে জয় মাত্র ২টিতে। 

শ্রীলংকার তারুণ্যনির্ভর এই দলটির অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই। ব্যাটিংয়ে টপ-অর্ডারে কুশল মেন্ডিস, দানুশকা গুণাথিলাকা, দিনেশ চান্ডিমালের উপর নির্ভর করে শ্রীলংকার সাফল্য। তবে শ্রীলংকার শক্তি তাদের বোলিং। স্পিনে তাদের সবচেয়ে বড় তারকা ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা। তার সাথে আছেন মহেশ থিকশানা, প্রবীণ জয়াবিক্রমা ও জেফরি ভান্ডারসে। 

তবে পেস বিভাগ শ্রীলংকার মাথা ব্যাথার কারন ইনজুরিতে শেষ মুর্হূতে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেছেন পেসার দুসমন্থ চামিরা। তার পরিবর্তে লংকানদের দলে সুযোগ হয়েছে পেসার নুয়ান থুসারার। পেস আক্রমনে নতুন মুখ হিসেবে আছেন- আসিথা ফার্নান্দো, দিলশান মধুশঙ্কা এবং মহেশ পাথিরানা। তিনজনের কারও টি-টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়নি। 

তবে এই দল নিয়েই এশিয়া কাপ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি শ্রীলংকার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তিনি বলেন, ‘দলের সকলেই পরীক্ষিত। এশিয়া কাপ জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে আমাদের। ছেলেরা নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজার করে দিতে পারলে শিরোপা জয় সম্ভব। এই দল নিয়ে আমি আশাবাদি।’

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার এশিয়া কাপের শিরোপা জয় করে শ্রীলংকা। আর রানার্স-আপ হয় ছয় বার। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছিলো লংকানরা। 

এশিয়া কাপের ১৪টি আসরে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪টি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলংকা। এরমধ্যে ৫০টি ওয়ানডেতে ৩৪ জয় ও ১৬টি
অন্য দিকে শ্রীলংকার মতই সাম্প্রতিক পারফরমেন্স আহামরি নয় আফগানিস্তানের। এ মাসেই আয়ারল্যান্ডের কাছে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হেরেছে আফগানরা। তবে গত জুনে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো আফগানিস্তান। আর গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিলো আফগানিস্তান।
২০১৪ সালে প্রথম এশিয়া কাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আফগানিস্তান। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার এই টুর্নামেন্টে খেলে তারা। বলর মত কোন সাফল্য নেই তাদের।

এশিয়া কাপে ৯টি ওয়ানডে ম্যাচে ৩টিতে জয়, ৫টি হার ও ১টিতে টাই করে আফগানিস্তান। 
তবে আগের রেকর্ডকে মুছে এবারের এশিয়া কাপে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপে আমাদের ভালো কোন রেকর্ড নেই ঠিকই । তবে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে এবার ভালো কিছু  করতে চাই।’

টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত মাত্র একবারই দেখা হয়েছে শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে সুপার টেনে কোলকাতায় হওয়া ঐ ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছিলো লংকানরা। 

সূত্র: বাসস