বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা চলছে : মোদি

বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে আলোচনা চলছে : মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দাম বর্তমানে সমস্ত উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ‘বিস্তৃত আলোচনা’ শেষে মোদি বলেন, ‘আজ মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ সম্পন্নের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করবে।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের পণ্য রফতানির জন্য এশিয়ার বৃহত্তম বাজার এবং এই প্রবৃদ্ধি আরো ত্বরান্বিত করতে তারা শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার ‘ফলপ্রসু আলোচনা’ হয়েছে।

তিনি বলেন, ভারত রিয়েল-টাইমের ভিত্তিতে বন্যা সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশের সাথে শেয়ার করছে এবং তারা তথ্য আদান-প্রদানের সময়সীমাও বাড়িয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্য দিয়ে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এগুলো দুই দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে আছে।

এ বিষয়ে মোদি বলেন, ‘এই নদীগুলো সম্পর্কিত লোককাহিনী ও লোকগীতিও আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাক্ষী। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছি। এটি ভারতের দক্ষিণ আসাম ও বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলকে উপকৃত করবে।’

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে মোদি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সাথে ধাপে ধাপে হাঁটবে। ‘আমাদের আজকের আলোচনাটি মূলত এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘আজ আমরা সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছি। ১৯৭১ সালের চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য, আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসকে আঘাত হানতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের একসাথে লড়াই করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অসামান্য উন্নতি করেছে।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘আজকে, বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং এই অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।’

মোদি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, তারা উভয়েই বিশ্বাস করেন যে কোভিড মহামারী ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে।

মোদি বলেন, ‘আমরা আইটি, মহাকাশ ও পারমাণবিক শক্তির মতো খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য আগ্রহের বিষয়। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও সুন্দরবনের মতো ঐতিহ্য রক্ষায়ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।’

তিনি বলেন, রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর উদ্বোধন পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

এই সেতুটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের অধীনে খুলনা ও মোংলা বন্দরের মধ্যে নির্মিত নতুন রেললাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

মোদি বলেন, বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভারত সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

সূত্র : ইউএনবি