বাংলাদেশ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে : রাষ্ট্রদূত মুহিত

বাংলাদেশ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে : রাষ্ট্রদূত মুহিত

বাংলাদেশ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ছে : রাষ্ট্রদূত মুহিত

জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ এ মুহিত বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতা বাড়ছে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে ২৬ সদস্যের একটি ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা নিয়ে আলোচনা করেন।রাষ্ট্রদূত জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে শীর্ষ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের ওপর আলোকপাত করেন।

তিনি এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে বাংলাদেশকে উন্নীতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন।তিনি জাতিসঙ্ঘে ‘শান্তির সংস্কৃতি’ এবং ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক দু’টি প্রস্তাব গ্রহণে বাংলাদেশের নেতৃত্বের কথা বলেন।দূত বাংলাদেশের প্রবর্তন করা আরো কয়েকটি রেজ্যুলিউশনের বিষয়ে কথা বলেন। এরমধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতা, ডুবে যাওয়া রোধ, প্রাকৃতিক উদ্ভিদ তন্তু এবং দোহা প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন (ডিপিওএ) উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ এখন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিশনের সভাপতি, ইউএন উইমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এবং সম্প্রতি এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।রাষ্ট্রদূত মুহিত বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কথাও তুলে ধরেন।তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা (ডিএ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: সাদেকুজ্জামান জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের নিযুক্তি এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের নিবেদিত ভূমিকা সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।

মো: সাদেকুজ্জামান বলেন, শান্তিরক্ষা অভিযানে সামরিক বাহিনী ও পুলিশের সকল শাখার অংশগ্রহণ বিশ্বে বিরল।এ পর্যন্ত ৫৬টি জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ১ লাখ ৮১ হাজার ৬৬১ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী অংশগ্রহণ করেছে।বর্তমানে ৯টি ভিন্ন মিশনে ৭ হাজার ১৪৪ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষীর দায়িত্ব পালনকালে এ পর্যন্ত ১৬৫ জন বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন এবং ২৫৮ জন আহত হয়েছেন।’

প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা (ডিএ) আরো উল্লেখ করেন, বর্তমানে শান্তিরক্ষা মিশনে ৫৪২ জন নারী শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের মিশনে একটি মহিলা পুলিশ ইউনিট (এফপিইউ) রয়েছে।ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের প্রতিনিধি দল মূল্যবান তথ্য বিনিময় এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য বাংলাদেশ মিশনকে সাধুবাদ জানায়।স্থায়ী প্রতিনিধি ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজ প্রতিনিধিদলকে তাদের সফরের জন্য বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনকে বেছে নেয়ায় ধন্যবাদ জানান।

জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন অনুসারে, ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজ সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিবছর শান্তি অভিযানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে বাংলাদেশ মিশন পরিদর্শন করে।

এই অংশীদারিত্ব জাতিসঙ্ঘ শান্তি কার্যক্রমে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অবদান এবং বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সুনাম ও পেশাদারিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এসেছে।ওয়ার কলেজে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন।

সূত্র : ইউএনবি