বেসরকারি খাতে জ্বালানি তেল আমদানি নতুন দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে

বেসরকারি খাতে জ্বালানি তেল আমদানি নতুন দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে

কাওসার রহমান

বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে। বোধকরি, বাংলাদেশকে যে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে যে আলোচনা চলছে তার অংশ হিসাবেই বেসরকারি খাতে তেল আমদানির বিষয়টিও উন্মুক্ত করার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। আইএমএফ এই শর্তের মুলে রয়েছে, জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি কমিয়ে আনা। এক্ষেত্রে জ্বালানির মূল্য-নির্ধারণ পদ্ধতি বাজারের ওপরেও ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আইএমএফ বলছে, মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতির সংস্কার করা হলে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি দেয়ার প্রবণতা কমে আসবে। এখন সেই দিকেই হাঁটছে সরকার। যেখানে ২০২১ সালে জ্বালানি তেলের জন্য প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছিল সরকার. সেখানে চলতি বছর তেলের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি অনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে। সরকার প্রধান থেকে সম্প্রতি বলা হয়েছে, জ্বালানি খাতে সরকার আর ভর্তূকি দিতে পারবে না। বাজার মুল্যেই জ্বালানি তেল কিনতে হবে।

এ কারণে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার জ্বালানি তেল আমদানি ও বিক্রির বিষয়টি বেসরকারি খাতের জন্য খুলে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। গত ২৮ নভেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। ওই সভাতেই জ্বালানি খাতে ভর্তুকি পুরোপুরি তুলে দিয়ে আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জ্বালানি বিভাগকে নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রিসভা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট কারণ দেখিয়ে সরকার এমন চিন্তা করছে। সরকার মনে করছে, বেসরকারি খাতে এই সুযোগ দিলে সরকারের ওপর চাপ কমবে।

এ্ই চাপ কমাতে জ্বালানি তেল আমদানি পরিশোধন ও বিপণনে কিভাবে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে কাজ চলছে। মন্ত্রি পরিষদ থেকে এ ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা পাঠাতে বলা হয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে। এক্ষেতে শুধু জ্বালানি তেল-ই নয, যেকোনো এনার্জি বেসরকারিভাবে আনার জন্য চিন্তা করতে হবে এবং তাদের মার্কেটিং কেমন হবে, সেটাও দেখতে বলা হয়েছে। বর্তমানে বিপিসি ছাড়া আর কেউ জ্বালানি তেল মার্কেটিং করতে পারে না। সেক্ষেত্রে বেসরকারি খাত যে অপরিশোধিত তেল আনবে, সেটা রিফাইন করে বিপিসিকে দিয়ে বিক্রি করলে সুবিধা হবে, নাকি তাদের নিজেদেরই বিক্রির অনুমতি দিলে ভাল হবে সেসব বিষয়ও দেখতে বলা হয়েছে।

তবে তেল যারা আমদানি করবে তাদের অবশ্যই পরিশোধন এবং মজুদের সক্ষমতা থাকতে হবে। এজন্য বেসরকারি খাতে রিফাইনারি তৈরি করতে হবে এবং তেল মজুদের সংরক্ষানাগার নির্মাণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের লাইসেন্স দেয়া হবে তারা কোন দেশ থেকে কতটুকু অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি কররতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। পরিশোধনের পর ওই তেল তারা বিপিসিকেও দিতে পারেন অথবা সরকার অনুমতি দিলে নিজেরাও বিক্রি করতে পারেন। তবে বেসরকারি খাতে রিফাইন করার পর তেলের মান পরীক্ষা করে  দেখবে বিএসটিআই।

ইতোমধ্যে নীতিমালা তৈরির কাজও শুরু করেছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন বিক্রিতে  বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা হলেও দর নির্ধারণের বিষয়টি নিজের হাতেই রাখবে সরকার। এ জন্য এনার্জি  রেগুলেটরি কমিশনকেই (বিইআরসিকে) যোগ্য মনে করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিইআরসির ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হবে।

এ বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একাধিক বৈঠক করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে বিইআরসির মাধ্যমে দর নির্ধারণের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে তিন মাস পরপর আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করবে বিইআরসি।

বর্তমানে দেশে প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী এলপিজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে নির্ধারিত দামে গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দাম পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য বিইআরসির আইনগত দুর্বলতা রয়েছে। বিইআরসি যাতে আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজটি করতে পারে, সে জন্য ঝুলে থাকা বিইআরসি প্রবিধানমালা সংশোধনীসহ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিইআরসি আইনের আলোকে ২০১২ সালে প্রবিধানমালার খসড়া করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও ঝুলে রয়েছে। ঝুলে থাকা প্রবিধানমালায় প্রয়োজনে পরিমার্জন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রবিধান সংশোধন করার জন্য আবেদনও করা হয়েছে। প্রবিধান চূড়ান্ত হলেই মাঠ পর্যায়ে বিইআরসি নির্ধারিত দামে এলপিজি কিনতে পাওয়া যাবে। তেমনিভাবে ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনের দামও বিইআরসির পক্ষে নির্ধারণ ও মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। সে জন্য সরকারকে পুরো সাপোর্ট (আইনগত ও লোকবল) দিতে হবে। তাহলে ব্যবসায়ীরা মনোপলি করার সুযোগ পাবে না।

এছাড়া এ কাজের জন্য প্রাইভেট কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। লাইসেন্সপ্রাপ্তদের নিজস্ব রিফাইনারি স্থাপন করতে হবে। রিফাইন করার পর তাদের তেলের মান বিএসটিআই পরীক্ষা করে দেখবে।

বেসরকারি খাতে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিক্রির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। পৃথিবীর অনেক দেশেই এই সুযোগ রয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও বেসরকারিভাবে জ্বালানি তেল আমদানি ও বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য সেসব দেশে যা করা হয় তা হলো, প্রতিদিন বা প্রতি ঘণ্টায় জ্বালানির দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে বেন্ট ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেলের দর বিবেচনায় পেট্রোল, অকটেন বা ডিজেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সেদেশে সরকার ছাড়াও বেসরকারি খাতে কিছু কোম্পানি জ্বালানি তেল আমদানি, পরিশোধন ও বিক্রি করে থাকে। বিশ্বের যেসব জায়গা থেকে তেল আমদানি করা হয়, তার সঙ্গে সরকারি কর ও মুনাফা যোগ করে প্রতিদিন ভারতে তেলের দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সরকারের জ্বালানি মন্ত্রণালয় প্রতিদিন এ কাজটা করে। ওই দেশে অনেক কিছু বিকেন্দ্রীকরণ হলেও জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে সরকারের কড়া নিয়ন্ত্রণ আছে।

আমেরিকায়  প্রতি ঘণ্টায় তেলের দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামা করে। কিন্তু সেখানে সরকারি কোন সংস্থা সেটা নির্ধারণ করে না। ক্রুড অয়েলের দাম, সরকারি কর, ভ্যাট ইত্যাদির সাথে নিজেদের মুনাফা মিলিয়ে পাম্প মালিকরাই প্রতিদিন সেটা ঠিক করেন। ফলে একই দিন একেক এলাকায় তেলের দাম একেক রকমও হতে পারে।

সুবিধা হলো, এসব দেশের ব্যবসায়ীরা সততা নিয়ে ব্যবসা করে। মানুষকে জিম্মি করে ব্যবসা করে না। তাদের মনিটরিং ব্যবস্থা খুবই শক্তিশালী।

আমাদের অর্থনীতিবিদরাও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দর বৃদ্ধি ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের কারণে বহুদিন ধরেই জ্বালানি তেল আমদানি ও বিক্রিতে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন।

এই পরামর্শ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের মুনাফাখোর প্রবণতার মতো একটি নিয়ন্ত্রণহীন দেশের প্রেক্ষাপটে কতটা বাস্তবতাপ্রসুত বা চিন্তুপ্রসুত তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে।

বর্তমানে সরকার জ্বালানি তেল বিক্রি করছে মুনাফা করার জন্য নয়। জনগণ স্বস্তি দেয়ার জন্য যে দামে কিনছে হয়তো সেই দামেই বিক্রি করছে। ধরে নেয়া যেতে পারে যে, সরকার এখানে ব্যবসা করছে না। কিন্তু বেসরকারি খাত যখন তেল এনে বিক্রি করতে সেখানে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে, তখন  তাদের উদ্দেশ্যই থাকবে ব্যবসা করা বা মুনাফা করা। সেক্ষেত্রে দামের ওপর তারা একটা নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করবে। তখন তারা সাধারণ মানুষের সুবিধা দেখবে না। তারা নানাভাবে দাম বাড়াতে চাইবে। রাজনৈতিক কিংবা অর্থ দিয়ে তারা প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে। যেটা বর্তমানে অন্যান্য ক্ষেত্রে করছে। এমনকি বিদ্যুত খাতেও করছে। যেখানে বর্তমান ব্যবস্থায় রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের আর প্রয়োজনই নেই, সেখানে মন্ত্রণালয় রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রের মেয়াদ বাড়িয়েই চলেছে। এটা যে কি কারণে বাড়ানো হচ্ছে, সেটা তো সাধারণ মানুষের না বুঝার কোন কিছু নেই। আর জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে যে এটা নির্ঘাত ঘটবে তা বলাই বাহুল্য। ফলে মন্ত্রণালয় কারণেই হোক ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেখার ফলে সাধারন মানুষের জন্য একটা অসুবিধা সৃষ্টি করবে।

আবার দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অনেক কমে গেলেও মুল্য সমন্বয় না করে সরকার বেশি মূল্যে বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। তখন এই সুবিধা তো বেসরকারি খাতকেও দিতে হবে। এতে তো ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের মানুষ। এক্ষেত্রে সরকারি তেলের জন্য এক দর আর বেসরকারি তেলের জন্য অন্য দর- এভাবে দ্বৈত দর নির্ধারণের কোন সুযোগ নেই।

বর্তমানে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপি গ্যাসের দাম সরকারিভাবে বেঁধে দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক বাজারের দর, আমদানি ও পরিবহন খরচ, মুনাফা ইত্যাদি বিবেচনায় রেখে প্রতিমাসে একবার এলপি গ্যাসের  দাম নির্ধারণ করে দেয় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেশন কমিশন (বিইআরসি)। কিন্তু ওই দর কোন কোম্পানি মানছে না। শুধু মানছেই না  রীতিমতো বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। অবশ্য এই আইন মানার জন্য বিইআরসি বিধি মালা সংশোধনের কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু আইন করলেই কি বেরসকারি খাতকে বশে আনা যাবে। বর্তমানে তো বহু আইন আছে। প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের বদৌলতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্য তেল ও চিনির দাম বেধে দিচ্ছে। কিন্তু কোম্পানিগুলোকে কি আইন মানানতে পারছে? বরং দাম বৃদ্ধির জন্য কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি, বাজারে নানা অজুহাতে সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া, ডলারের উচ্চ মুল্যের ছুতো দেখিয়ে আগে কেনা পণ্যের দামও বেশি দামে বিক্রি করেছে এবং করছে। বরং সিন্ডিকেট করে কোম্পানিগুলো এক জোট হয়ে সরকারকে দাম বাড়াতে বাধ্য করছে। এক্ষেত্রে সরকার কিছুই করতে পারছে না। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে যে এটা নির্ঘাত ঘটবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বেরসকারি খাতের নীতি নৈতিকতা ঠিক করার আগে এ ধরণের বড় সিদ্ধান্তে যাওয়া কি ঠিক হবে।

আবার জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভর করে পরিবহন ভাড়া। সেই পরিবহন ভাড়াও কি তিন মাস পর পর নির্ধারণ করে দেয়া হবে। একবার পরিবহন ভাড়া বাড়লে তা আর কমে না । সরকার যতই কমিয়ে দিক না কেন বাস মালিকরা কোনভাবেই তা মানে না। বরং জ্বালানি তেলের মুল্য বৃদ্ধি হলেও পরিবহন ভাড়ায় এক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। সরকার তো হুঙ্কার দিয়েই শেষ। আজ পর্যন্ত পরিবহন খাতে নৈরাজ্য বন্ধ করতে পারেনি। পরিবহন মালিকরা যেভাবেই চায় সেভাবেই সরকার করতে বাধ্য হয়। অন্যথায় পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে জিম্মি করে ফেলে। ফলে সরকার পরিবহন মালিকদের কথা শুনতে বাধ্য হয়। তাহলে জ্বালানি তেলের মতো একটি স্পর্শকাতর পণ্যে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করার কতটা যুক্তিযুক্ত সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।

সর্বশেষ, সরকার আইএমএফের প্রেসক্রিপশন মানতে গিয়েই এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। জ্বালানি খাতেও ভর্তূকি তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এই ভতূকি তো সরকার জনগনের ট্যাক্সের টাকা থেকে দিচ্ছে। কোন মন্ত্রি কিংবা অন্য কারো পকেট থেকে দেয়া হচ্ছে না। জনগনের ট্যাক্সের টাকাই জনগনের সুবিধার জন্য ভতূকি আকারে দেয়া হচ্ছে। এতে আইএমএফ বা সরকারের সমস্যা কোথায়। উল্টো বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ক্যাপাসিটি চার্জ, কিংবা প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি, প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি, নিজস্ব পরিশোধন ক্ষমতা না বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে পরিশোধিত তেল কেনার নামে কমিশন ইত্যাদি নানা কায়দায় যে জনগনের এই ট্যাক্সের টাকার লুটপাট করা হচ্ছে, সেটি বন্ধ করার কোন উদ্যোগ বা সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যাচ্ছে না। নতুন নতুন দুর্নীতির সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় যতটা আগ্রহী দুর্নীতি বন্ধের ব্যাপারে এই আগ্রহ থাকলে স্বয়ংসম্পূর্ণ বিদ্যুত খাতের এই নাজুক অবস্থা তৈরি হতো না।

লেখক: কাওসার রহমান, প্রধান প্রতিবেদক, দৈনিক জনকণ্ঠ।