কাশির ওষুধ সেবনে ৩০০ শিশুর মৃত্যু: নতুন তদন্ত শুরু করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

কাশির ওষুধ সেবনে ৩০০ শিশুর মৃত্যু: নতুন তদন্ত শুরু করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ফাইল ছবি

গত বছর ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তৈরি দূষিত কাশির ওষুধ সেবন করে তিন দেশে কমপক্ষে ৩০০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর এবার এক বিশেষ তদন্ত শুরু করতে চলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জানা গেছে, ওই ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোর নিজেদের মধ্যে কোনও যোগ রয়েছে কি না, এবার তা খতিয়ে দেখা হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে। পাশাপাশি ওই ছয় সংস্থা একই জায়গা থেকে ওষুধের কাঁচা মাল সংগ্রহ করত কি না তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে।

সংশ্লিষ্ট কাশির সিরাপগুলোয় ‘মাত্রাতিরিক্ত টক্সিন’ বা ডাইইথাইলিন গ্লাইকল এবং ইথাইলিন গ্লাইকল রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ফলে তা সেবন করে তীব্র কিডনির সমস্যায় ভুগতে শুরু করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার বহু শিশু। গত বছর জুলাইয়ে সেখান থেকেই প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। এরপর একই কারণে একে একে শিশুমৃত্যুর খবর আসতে থাকে ইন্দোনেশিয়া এবং উজবেকিস্তান থেকেও।

তদন্তে নেমে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার ওই কাশির ওষুধ প্রস্তুতকারকদের চিহ্নিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। যদিও এই সংস্থাগুলোর অধিকাংশই দূষিত কাঁচামাল ব্যবহারের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আর বাকিরা কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে সোমবার জানানো হয়, ওষুধে ডাইইথাইলিন গ্লাইকল এবং ইথাইলিন গ্লাইকল-এর ব্যবহার কোথায় কোথায় করা হচ্ছে তা ঘিরে তদন্তের পরিধি গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং উজবেকিস্তানের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে তারা। যে তালিকায় রয়েছে কম্বোডিয়া, ফিলিপাইন্স, সেনেগাল এবং পূর্ব তিমুর।

পাশাপাশি, অন্যান্য দেশের সরকার এবং বিশ্বের বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাকে নিম্নমানের ওষুধ শনাক্ত করে তা গোড়াতেই আটকানোর দিকে জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

উল্লেখ্য, দূষিত কাশির ওষুধ সেবন করে শিশুমৃত্যুর এই ঘটনায় মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মারিয়ন বায়োটেক নামে দুই ভারতীয় সংস্থা যুক্ত বলে গত বছর অক্টোবরেই জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ মাসের গোড়াতেও যথাক্রমে গাম্বিয়া এবং উজবেকিস্তানের শিশুমৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে আরও একবার নামগুলো উল্লেখ করা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে। পাশাপাশি এই দুই সংস্থার তৈরি কাশির সিরাপ ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে ডব্লিউএইচও। প্রসঙ্গত, বিতর্কে নাম জড়ানোর পরে এই দুই সংস্থারই ওষুধ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, গত বছর ডিসেম্বরে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, তাদের পরীক্ষায় মেডেনের তৈরি ওষুধে কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি। এরপর ফের ওষুধ কারখানাটির দরজা খোলার তোড়জোড় চালাচ্ছে সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ। 

সূত্র: রয়টার্স, জাকার্তা পোস্ট