তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: প্রাণহানি ছাড়ালো ২২ হাজার

তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: প্রাণহানি ছাড়ালো ২২ হাজার

ফাইল ছবি

৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালি ভূমিকম্পের ১০০ ঘন্টা পার হলেও তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুই দেশ মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ২২ হাজার ৩৬৮ জন। তবে জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়েছে এই ধ্বংসযজ্ঞের পুরো চিত্র এখনো পরিষ্কার না। অর্থাৎ মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত তুরস্কে ১৮ হাজার ৯৯১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে সিরিয়ায় উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৩৭৭টি মরদেহ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। কিন্তু ভূমিকম্পের পর প্রায় ১০০ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ায় কাউকে আর জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভোররাত ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। দেশ দুটিতে নিহতের সংখ্যা ২২ হাজার নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ।এছাড়াও এই ভূমিকম্পের ফলে দুই দেশের প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি ভবন ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে, বাসস্থান হারিয়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।

এই পরিস্থিতে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আর্থিক ও মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে। এই তালিকায় যোগ দিয়েছে বিশ্বব্যাংকও। ভূমিকম্পের পর ত্রাণ ও পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টায় সহায়তা হিসেবে বৃহস্পতিবার তুরস্ককে ১.৭৮ বিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক।

এদিকে যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তারাও নিদারুণ কষ্টে আছেন। অসংখ্য মানুষ তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে আশ্রয় ও খাবার ছাড়া থাকায় তাদের জীবনও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। তুরস্কের সাধারণ মানুষ এখনো উদ্ধারকাজের ধীরগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, কিছু কিছু জায়গায় ভূমিকম্পের তিন দিন পর উদ্ধারকারীরা এসেছেন। ফলে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েও যারা জীবিত ছিলেন তারা তীব্র ঠাণ্ডা ও পানির অভাবে মারা গেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, মানবিক সংস্থাগুলোর সামনে এখন তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় ভূমিকম্পে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের বাঁচিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ আসছে।

বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির ইনসিডেন্ট রেসপন্স ম্যানেজার রবার্ট হলডেন বলেন, এখন হাজার হাজার মানুষ খোলা জায়গায়, খারাপ ও ভয়াবহ অবস্থায় বেঁচে আছে। যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিতসহ পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নেই।