বাইডেন-লুলা বৈঠকে গণতন্ত্র সুরক্ষা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলার অঙ্গীকার

বাইডেন-লুলা বৈঠকে গণতন্ত্র সুরক্ষা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলার অঙ্গীকার

বাইডেন-লুলা বৈঠকে গণতন্ত্র সুরক্ষা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলার অঙ্গীকার

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট  জো বাইডেন ও  ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে আলোচনায় আমেরিকার দুটি বৃহত্তম  দেশ সফলভাবে তাদের গণতন্ত্রের উপর হামলা মোকাবিলা করেছে এবং এখন জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এই দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে মত দেন।বাইডেন লুলাকে বলেন, আমাদের উভয় দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র পরীক্ষিত এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিল উভয়ই গণতন্ত্র বিজয়ী। ওভাল অফিস-এর বৈঠকে, বাইডেন ও লুলা তাদের পারস্পরিক অভিন্ন দিকগুলোর ওপর  সংহতি প্রকাশ করেন।

বাইডেন ২০২০ সালে ডোনাল্ড  ট্রাম্পকে পরাজিত করে ক্ষমতায় বসেন। তবে  নির্বাচনে নিজেকে প্রকৃত বিজয়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করায় ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেন ট্রাম্প । কিন্তু দুই মাস পরে এক দল  ট্রাম্প সমর্থক কংগ্রেসে আঘাত হানে।এদিকে ব্রাজিলে সাম্প্রতিক নির্বাচনে,  ডানপন্থি জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করে এই জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণ করেন লুলা। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরেই  বোলসোনারো সমর্থকরা সরকারি ভবনে হামলা চালায়।

লুলা বাইডেনকে বলেন, আমাদের কিছু অভিন্ন বিষয় আছে যেগুলো নিয়ে আমরা একসাথে কাজ করতে পারি। এসব বিষয়ের প্রথমটি হল- গণতন্ত্রবিরোধীতাকে আর কখনও সয্য না করা।
বাইডেন ও লুলা আলোচনার ফাঁকে আমাজন  রেইনফরেস্ট বাঁচাতে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তাদের পারস্পরিক প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন। বাইডেন বলেন,  তাদের অভিন্ন মূল্যবোধ তাদেরকে একই অবস্থানে রেখেছে, বিশেষত যখন জলবায়ু সংকটের কথা আসে। তবে বাইডেন প্রশাসন ব্রাজিলে বন উজাড়-বিরোধী অর্থায়ন প্রচেষ্টায়  আন্তর্জাতিক প্রকল্প অ্যামাজন ফান্ডে অবদান রাখতে রাজি হবে কিনা, তা আলোচনায় স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। এ সম্পর্কে লুলা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি তারা(যুক্তরাষ্ট্র) করবে।

আমি মনে করি না যে তারা করবেই, তবে তাদের অংশগ্রহণ  প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’ তিনি  বলেন,  ‘আমি কেবল আমাজন তহবিল নিয়ে আলোচনা করি নাই বরং  ব্রাজিলের  রেইনফরেস্টসহ  দেশগুলিকে তহবিল  দেওয়ার জন্য ধনী  দেশগুলির দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেছি।’ লুলা ওভাল অফিসে বাইডেনকে বলেন, তার পূর্ববর্তী  প্রেসিডেন্ট তার সময় ২০০৩-২০১০ এর মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাস শোষণের ‘বিশ্বের ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত বৃহত্তম রেইনফরেস্ট ব্রাজিলের অ্যামাজনের বন উজাড় করার জন্য ব্রাজিলকে প্ররোচিত করেছিলেন।                                                                                                                        অন্যদিকে,বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন  নেতৃত্বকে তার নিজের প্রধান অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছেন। বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস করায়  ঐতিহাসিক চুক্তি  থেকে  ট্রাম্প বেরিয়ে যাওয়ার পর বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফিরিয়ে আনেন।

ইউক্রেন প্রশ্নে মতভিন্নতা:
বাইডেন ও লুলা ইউক্রেন প্রশ্নে পুরোপুরি একমত নন। ওভাল অফিসে রাশিয়ার আগ্রাসণের বিষয়টি তাদের আলোচনার সূচনায় আসেনি।

রাশিয়াকে প্রতিহত করার জন্য  ইউক্রেনকে অস্ত্র, সামরিক প্রশিক্ষণ ও কূটনৈতিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সমাবেশ করার জন্য একটি অভূতপূর্ব পশ্চিমা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছেন বাইডেন । তবে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো  বেশ কয়েকটি প্রধান গণতান্ত্রিক  দেশের ন্যায়  ব্রাজিল ইউক্রেনকে  সামরিক সহায়তা ও রাজনৈতিকভাবে মিশ্রবার্তা পাঠাতে অস্বীকার করে।

তবে বৈঠক শেষ হওয়ার পর, লুলা সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে  রাশিয়ার যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত নয়, এমন কয়েকটি দেশের একটি দলকে একত্রিত করতে চান।  তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত  যে এই যুদ্ধ শেষ করার জন্য আমাদের একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। বাইডেন একই উদ্বেগ  প্রকাশ করেন, তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হল যুদ্ধ বন্ধ করা।’

সূত্র  : বাসস