রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন, তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় পেছাল

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন, তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় পেছাল

সংগৃহীত

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) জমা দিতে পারেনি তদন্ত কমিটি। সরকারি বন্ধ ও নানা কারণে রোববার (১২ মার্চ) পর্যন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনে সময় পেয়েছে তদন্ত দল। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই দিনই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান।

তিনি বলেন, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাসহ অন্যদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ অনেক আলামতও সংগ্রহ করা হয়েছে। আগুন লাগানোর একটি ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, ‘প্রতিবেদন সুচারুভাবে তৈরির চেষ্টা করেছি। তবে এসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও ব্যস্ততার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। ঊর্ধ্বতনদের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছি। আগামী সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে (১২ মার্চ) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। তখন আপনারা জানতে পারবেন আগুন লাগার আসল কারণ।

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ তে আগুন লাগার শুরু থেকে বিষয়টি ‘পরিকল্পিত নাশকতা’ বলে দাবি করে আসছিলেন রোহিঙ্গা নেতারা। ঘটনার জন্য রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) দায়ী করেন। আগুন লাগানোর অনেক ভিডিও তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানায় রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গাদের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে ৩৩টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেন রোহিঙ্গারা। আশ্রয় নেয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সশস্ত্র সংগঠন আরসার একচ্ছত্র অধিপত্য ছিল। সম্প্রতি ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান নেয় আরেক সশস্ত্র সংগঠন ‘আরএসও’। এছাড়া রয়েছে নবী হোসেন গ্রুপ, মাস্টার মুন্না গ্রুপসহ বিভিন্ন নামে প্রায় অর্ধশত গ্রুপ। মাদক ব্যবসা, অপহরণ, ধর্ষণ, ডাকাতি, মারামারি, খুনের সাথে জড়িত এসব গ্রুপ-উপগ্রুপ। এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের হাতে বলি হচ্ছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।

নিজেদের আধিপত্য নতুন করে জানান দিতে সবশেষ ৫ মার্চ বালুখালী ক্যাম্প ১১-তে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে আগুনে পুড়েছে ৯ ও ১০ নম্বর ক্যাম্পও। সেখানে দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে বলে দাবি ক্যাম্প সূত্রের। এতে গৃহহীন হয়ে পড়েন ১২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। ক্ষতিগ্রস্তরা পুনরায় মাথাগোজার ঠাঁই তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং অন্য দাতা সংস্থা তাদের সহযোগিতা করছে।

ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ানকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা ছিল।