প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের সাথে ভারতীয়দের প্রতারণা!

প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের সাথে ভারতীয়দের প্রতারণা!

প্রযুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের সাথে ভারতীয়দের প্রতারণা!

কম খরচে ইংরেজি বলতে পারা কর্মী পাওয়ায় বিশ্বের অনেক কোম্পানি তাদের কাস্টমার সার্ভিসের কাজ ভারতে আউটসোর্স করে। এই সুযোগে দেশটিতে ভুয়া কল সেন্টারও গড়ে উঠছে।এসব সেন্টারের কর্মীরা ভুয়া কর কর্মকর্তা, ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির কর্মকর্তা সেজে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের লাখ লাখ মানুষকে ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) বলছে, শুধু গতবছর ভারতের ভুয়া কল সেন্টারগুলোর কারণে মার্কিন নাগরিকেরা ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি হারিয়েছেন।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের পুলিশ আহমেদাবাদ, দিল্লি, মুম্বাই ও কলকাতার কয়েক শ’ ভুয়া কলসেন্টারে অভিযান চালিয়েছে।

এমন কয়েকটি অভিযান চালানো আহমেদাবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অজিত রাজিয়ান বলেছেন, ‘আপনার শুধু একটা কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দরকার। আর দরকার একটা ফোন, ইন্টারনেট সংযোগ ও তথ্য- যা কালোবাজারে সহজেই পাওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘বাসা থেকে, অফিস থেকে বা যেকোনো জায়গা থেকে সহজেই কলসেন্টার পরিচালনা করা যায়।’
অভিযানে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের প্রায় সবার বয়স ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে।

জাতিসঙ্ঘের হিসাবে, এপ্রিল মাসে চীনকে টপকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হতে যাচ্ছে ভারত। প্রায় ১৪৩ কোটি লোকসংখ্যার ৪০ শতাংশের বয়স ২৫-এর নিচে। প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু এতজনকে চাকরি দেয়ার সামর্থ্য ভারতের নেই। সে কারণে তরুণদের একটি অংশ এসব ভুয়া কল সেন্টার, কম বেতনের চাকরি, যেমন গিগ চাকরিতে ঢুকতে বাধ্য হচ্ছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

গিগ অর্থনীতি হচ্ছে এমন এক পরিবেশ, যেখানে অস্থায়ী চাকরির ছড়াছড়ি থাকবে, আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্বল্পমেয়াদি চুক্তিতে স্বতন্ত্র কর্মীদের (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ওয়ার্কার্স) নিয়োগ দেবে। অর্থাৎ গিগ অর্থনীতিতে পূর্ণকালীন কর্মীদের চেয়ে ফ্রিল্যান্সারদের গুরুত্ব বেশি থাকে।

বিশ্বে গিগ অর্থনীতির সবচেয়ে বড় ও দ্রুত বর্ধনশীল দেশগুলোর একটি ভারত। ২০২০-২১ সালে প্রায় ৮০ লাখ কর্মী গিগ অর্থনীতিতে কাজ করেছেন। ২০২৯-৩০ এর মধ্যে সংখ্যাটি ২ কোটি ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে সরকারি থিংক ট্যাংক ‘নীতি আয়োগ’।অল ইন্ডিয়া গিগ ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সমন্বয়ক রিক্তা কৃষ্ণাস্বামী বলেন, ‘সরকার, শিল্পখাত ও চাকরিদাতারা গিগ অর্থনীতিকে খুব ভালো একটি ব্যবস্থা হিসেবে তুলে ধরে। কিন্তু এটি আসলে শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের একটি উপায় বলে মনে হয়।’

সূত্র : ডয়চে ভেলে