সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার দুয়ারে দক্ষিণ আফ্রিকা

সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার দুয়ারে দক্ষিণ আফ্রিকা

সংগৃহীত

আগের ম্যাচে এইডেন মারক্রামকে ফিফটি করে থামতে হয়েছিল দল জিতে যাওয়ায়। এবার তিনি খেললেন দেড়শ ছাড়ানো দুর্দান্ত এক ইনিংস। সঙ্গে ডেভিড মিলারের ঝড়ো ব্যাটিং দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দিল বড় পুঁজি। পরে বল হাতে আলো ছড়ালেন সিসান্ডা মাগালা। নেদারল্যান্ডসকে আবার অনায়াসে হারিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার আশা ভালোভাবে বাঁচিয়ে রাখল প্রোটিয়ারা। 

জোহানেসবার্গে রবিবার (০২ এপ্রিল) তৃতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ১৪৬ রানে। ৩৭০ রানের পুঁজি গড়ে ডাচদের থামিয়ে দেয় তারা ২২৪ রানে। এই জয়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে (৮৮ পয়েন্ট) টপকে আটে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা (৯৮ পয়েন্ট)। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের বিশ্বকাপে খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এখন পেরিয়ে আসতে হবে বাছাইপর্ব।

স্বাগতিক ভারতসহ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ ৮ দল সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। সেখানে ৭ দলের সরাসরি খেলা চূড়ান্ত হয়েছে আগেই। বাকি ১টি জায়গার লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আছে এখন আয়ারল্যান্ড (৬৮ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে)। আগামী মে মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে সবগুলি ম্যাচ জিতলেই কেবল দক্ষিণ আফ্রিকাকে টপকাতে পারবে আইরিশরা। 

দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক মারক্রাম। ক্যারিয়ারে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে তিনি ১২৬ বলে খেলেন ১৭৫ রানের ইনিংস। যেখানে ১৭টি চারের পাশে ছক্কা ৭টি। মিলার ৯ রানের জন্য পাননি সেঞ্চুরি। তার ৬১ বলে ৯১ রানের ইনিংস গড়া ৪ ছক্কা ও ৬ চারে। মারক্রামের সঙ্গে তার পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৯৯ রান আসে ১১৮ বলে। জবাবে ৫ উইকেটে ২১৭ রানের অবস্থানে থেকে ব্যাটিং ধসে ৩৯.১ ওভারে ২২৪ রানে গুটিয়ে যায় ডাচরা।  ৩২ বছর বয়সী পেসার মাগালা প্রথমবার ৫ উইকেটের স্বাদ পান ৪৩ রান দিয়ে। 

২০২১ সালে প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর করোনাভাইরাসের কারণে সেসময় স্থগিত করা হয় এই সিরিজ। নতুন সূচিতে তিন ওয়ানডের বাকি দুটি হলো এখন। ২-০ তে সিরিজ জিতল প্রোটিয়ারা। 

দা ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ভালো ছিল না। ৩২ রানের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। তিন নম্বরে নেমে রাসি ফন ডার ডাসেন থিতু হয়েও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি (৪০ বলে ২৫)। হাইনরিখ ক্লসেন দ্রুত ২১ বলে করেন ২৮ রান। 

২৬তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান তখন ৪ উইকেটে ১৪৫। সেখান থেকেই মারক্রাম ও মিলারের ওই বিস্ফোরক জুটিতে স্বাগতিকদের রানের পাহাড়। মারক্রাম ৪৭ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৮৬ বলে। মিলার পঞ্চাশে পা রাখেন ৪৫ বলে। এরপর আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।  প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে মারক্রামের ডাবল সেঞ্চুরি ও মিলারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি মনে হচ্ছিল খুব সম্ভব। কিন্তু ছক্কার চেষ্টায় ৪৬তম ওভারে  বাউন্ডারিতে ধরা পড়ে থামেন মারক্রাম। পরের ওভারে পেসার পল ফন মেকেরেনকে ফিরতি ক্যাচ দেন মিলার।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই বিক্রমজিত সিংকে হারায় নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় উইকেটে ৮৭ বলে ৮৫ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ম্যাক্স ও’ডাওড ও মুসা আহমেদ। ৪৯ বলে ৪৭ রান করা ও’ডাওডকে বোল্ড করে শিকার ধরা শুরু মাগালার। ডাচরাও এরপর পারেনি আর কোনো বড় জুটি গড়তে। ৬৯ বলে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন মুসা। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ৩৩ বলে ৪২ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরতেই ধস নামে তাদের ইনিংসে। ৭ রানের মধ্যে হারায় শেষ ৫ উইকেট।