ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই : আতিউর রহমান

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই : আতিউর রহমান

সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বর্তমানে বিশ্বে অর্থনীতির যে গতি সেই গতির সঙ্গে তাল মেলাতে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ চাই, সবার জন্য চাই।

‘কাগজের অর্থ ডিজিটালে রূপান্তর : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা গ্রহণ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিউর রহমান এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ সেমিনারের আয়োজন করে স্কলারস বাংলাদেশ সোসাইটি ও ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেড।

উন্নয়ন সমন্বয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারপারসন ড. আতিউর রহমান বলেন, ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের সবচেয়ে বড় উদাহরণ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রতিদিন তিন হাজার কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়। ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকও সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) কার্যক্রমের ব্যাপারে একটু ধীর গতিতে এগোচ্ছে। সেটা সমস্যা নয়, তারা আস্তে আস্তে ক্যাশলেস পেমেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে শিগগিরই ডিজিটাল ব্যাংকিং চালু হবে। কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ক্যাশলেস সোসাইটির জন্য মতিঝিলে পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে। এখন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিকাশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল এস কাদির বলেন, লেনদেনের মূলে রয়েছে ‘বিশ্বাস’। টাকার কাগজে যেমন লেখা থাকে ‘চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিতে হইবে’, তেমনি ডিজিটালে লেনদেন হলেও গ্রাহকের আস্থা অর্জন করতে হবে। বিকাশ সেই আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। বিকাশের প্রতিটি লেনদেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং রয়েছে। ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহকদের অর্থের নিরাপত্তা থাকতে হবে।

ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্যে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস গ্রহণ করার ফলে দেশের অর্থনৈতিক লেনদেনের ইতিহাসে বিপ্লব ঘটে গেছে। বর্তমানে বিশ্বের ১২২টি দেশ ডিজিটাল মুদ্রানীতি গ্রহণের পথে রয়েছে। ডিজিটাল মুদ্রানীতি চালু হলে আমাদের অর্থ বাঁচবে এবং লেনদেন আরো কার্যকরী হবে। দেশে ডিজিটাল কারেন্সি চালু করতে ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ এবং কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা উচিত।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল কারেন্সি বিষয়ক আরো চারটি সেমিনার আয়োজন করব। দেশ–বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞরা এসব সেমিনারে যেসব মতামত দেবেন সেগুলো এবং ইমার্জিং ক্রেডিট রেটিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন আহমেদের তথ্য–উপাত্ত নিয়ে ডিজিটাল কারেন্সি বিষয়ক একটি বই প্রকাশ করা হবে। এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্স লিমিটেড বইটি প্রকাশ করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রানীতিতে যারা কাজ করবে তারা এ বই থেকে অনেক তথ্য পাবেন ও বইটি তাদের কাজে লাগবে। এছাড়া এই বই ডিজিটাল কারেন্সি বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ভান্ডার হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা দিলারা আফরোজ খান রূপা। এছাড়াও প্যানেলিস্ট হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি পেশাজীবী ড. মিজানুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ল সিকিউ ইউনিভার্সিটির ড. মাসুদ ঈসা, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করে মার্স সলিউশনস লিমিটেড।