বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন খাত পাটকাঠির ছাই

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের নতুন খাত পাটকাঠির ছাই

সংগৃহীত

মাগুরায় পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছাই। যা দিয়ে তৈরি করা হয় কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার এবং কম্পিউটার প্রিন্টারের কালি।

এই ছাই রফতানি হচ্ছে চীনে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সম্ভাবনার নতুন খাত হিসেবে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে পাটকাঠির ছাই।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মধুমতি নদীর তীরে রুইজানী গ্রামে ২০১৬ সালে গড়ে ওঠে ইমপিগনা প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ছাই উৎপাদন কারখানা।

এ কারখানায় কার্বন উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হাজার হাজার মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়।

কারখানার ম্যানেজার খোরশেদ আলম জানান, পাটকাঠি পোড়ানোর জন্য এই কারখানায় ১৬টি চুল্লি রয়েছে। প্রতিটি চুল্লিতে ৭৫ থেকে ১০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো যায়।

তিনি জানান, প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়। প্রতি মাসে প্রায় ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই বা চারকোল পাউডার উৎপাদন করা হয়। ওই হিসেব অনুযায়ী ছয় মাসে (মৌসুম) গড়ে ৬৩ হাজার মণ থেকে ৭২ হাজার মণ পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরি করা হয়।

তিনি আরো বলেন, পাটকাঠি পোড়ানোর পর টানা পাঁচদিন চুল্লি বন্ধ রাখা হয়। ষষ্ঠ দিন চুল্লি খুলে পোড়া পাটকাঠি জাঁতা মেশিনে ভাঙিয়ে পাউডার করা হয়। ওই পাউডারের নামই চারকোল। যা দিয়ে তৈরি হয় মূল্যবান কার্বন পেপার, ফটোকপিয়ার এবং কম্পিউটার প্রিন্টারের কালি।

ভাঙানো পাউডার সাড়ে ১২ কেজি বা ১৫ কেজির দুই স্তরের পলিব্যাগে ভরা হয়। যাতে করে ব্যাগের মধ্যে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। এরপর লেমিনেটেড ব্যাগের মধ্যে দিয়ে সেলাই করা হয়। সেলাই করা ব্যাগগুলো দুই থেকে তিন দিন খোলা স্থানে খাড়া করে রাখা হয়। এরপর তা গুদামে অন্তত ২১ দিন রাখতে হয়। এই ছাই পরে ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। সেখান থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় চীনে।

বর্তমানে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাগুরাসহ কয়েকটি জেলার প্রায় ৪০ কারখানায় এই চারকোল পাউডার বা ছাই উৎপাদিত হয়। এসব কারখানা থেকে বছরে প্রায় সাত হাজার ৭১ টন উৎপাদিত ছাই বিদেশে রফতানি করা হয়। এতে বছরে আয় হয় প্রায় ৪০ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: হাবিব এ হাসান জানান, এখানে প্রতি মাসে গড়ে ১২ হাজার মণ পাটকাঠি পোড়ানো হয়, যা থেকে ৭৫ টন ছাই বা চারকোল পাউডার উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত পাউডার চীনে রফতানি করা হয়।

প্রতি টন ছাইয়ের দাম ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ওই হিসাব অনুযায়ী ছয় মাসে (মৌসুম) তিন কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়।
সূত্র : ইউএনবি