পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু

ফাইল ছবি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে শর্ত সাপেক্ষে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য উন্মুক্ত হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সকাল ৬টা থেকে পদ্মা সেতুর সার্ভিস লেনে মোটরসাইকেল চলাচল করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে জাজিরা টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক কামাল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ছয় শর্তে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। পদ্মা সেতুর নির্ধারিত সার্ভিস লেন দিয়ে এসব মোটরসাইকেল চলাচল করছে।

এর আগে, ঈদযাত্রার সুবিধার্থে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাটে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করেছিল কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতু দিয়ে প্রায় ১০ মাস পর মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ায় আবারও ফাঁকা পড়ে রয়েছে ফেরি। সেতু চালু হওয়ার পর প্রথম বারের মতো বন্ধ হয়েছিল ফেরি চলাচল। এবার এখনো আনুষ্ঠানিক বন্ধ ঘোষণা করেনি কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা যায়, ঈদযাত্রীদের সুবিধার জন্য গত সোমবার (১৭ এপ্রিল) বরিশালের ভোলা থেকে শিমুলিয়া ঘাটে পৌঁছায় ফেরি কলমিলতা ও কুঞ্জলতা। পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মোটরসাইকেল ও যাত্রী নিয়ে শিমুলিয়া ও সাত্তার মাদবর-মঙ্গলমাঝির ঘাটে চলাচল শুরু করে ফেরি দুটি। আজ থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরিতে কোনো মোটরসাইকেল আরোহী যাত্রী হিসেবে পদ্মা পার হচ্ছেন না।

এক বাইকার বলেন, যে ছয়টি শর্ত কর্তৃপক্ষ দিয়েছে, তা মেনেই আমরা পদ্মা সেতু পাড় হব। দুই দিন আগে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছিল বাইকারদের জন্য। কিন্তু এখন সেতু দিয়ে পাড় হতে পারব বলে ফেরিতে যাইনি।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। এজন্য চালকদের কিছু শর্ত বেঁধে দেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্ধারিত টোল দিয়ে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে। এর জন্য নির্ধারিত টোলবুথ ও নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নির্ধারিত লেন পরিবর্তন করা যাবে না। ওভারটেকও করা যাবে না। চালক ও আরোহীকে হেলমেটসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সেতুর ওপর দাঁড়ানো বা ছবি তোলা যাবে না। চালকসহ সর্বোচ্চ দুজন মোটরসাইকেলে চড়তে পারবেন।

বর্ণিত শর্তসমূহ প্রতিপালন করে পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

শৃংখলা না মানলে মোটরসাইকেল চলাচলের এ সুযোগ বাতিল করা হবে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। পরদিন ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। তারপর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

পরদিন এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ জুন সকাল ৬টা থেকে পুনরায় আদেশ না দেয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরে এ গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে রিট করা হয়। পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ কেন বেআইনী হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয় রিটে। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রিটে নির্দেশনাও চাওয়া হয়।

পরে গত ১৫ জানুয়ারি পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের বিরুদ্ধে করা ওই রিটের শুনানি আট সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছিলেন হাইকোর্ট। পরে রিট আবেদনটি ২৯ মার্চ আবার কার্য তালিকায় এলে আরও চার সপ্তাহের জন্য সেটি মুলতবি করা হয়।