‘সব ক্ষেত্রে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি’

‘সব ক্ষেত্রে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা জানান।

 ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস-২০২৩’ এর প্রতিপাদ্য ‘নিশ্চিত করি শোভন কর্মপরিবেশ, গড়ে তুলি স্মার্ট বাংলাদেশ’।

শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এবং স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিধি পালনকে জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উন্নয়নশীল দেশের ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। আমরা সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এই অদম্য অগ্রযাত্রায় দেশের শ্রমজীবী মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ত্যাগ জড়িয়ে আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ১৪ বছরে শ্রমিকদের শোভন কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, তাদের পেশাগত স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ড বজায় রাখতে বিভিন্নমুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। আমরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধন ও হালনাগাদ করেছি।

‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা ২০১৩’ এবং ‘বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা ২০১৫’ প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নিরাপদ ও শোভন কর্মপরিবেশ প্রতিষ্ঠায় আমরা নিয়মিত শ্রম পরিদর্শন, শ্রম অভিযোগ নিষ্পত্তি, নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন, দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতকরণ ও সেইফটি কমিটি গঠন করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আমরা শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন এবং মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেল নির্মাণ করেছি। শ্রমিকদের চিকিৎসায়, তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা কবলিত শ্রমিক পরিবারকে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন ও কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে নিয়মিতভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলার ক্ষেত্রে আইএলও এর সহায়তায় আমরা পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি গাইডলাইন তৈরি করি। চালু করা হয় টেলিমেডিসিন সেবা। আমাদের সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ ও উদ্যোগের ফলে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ ও জীবনমানের উত্তরোত্তর উন্নতি হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে শ্রমিক কল্যাণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। শোষণবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো শ্রমনীতি ঘোষণা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প শ্রমিক মজুরি কমিশন গঠন, বিভিন্ন সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, শ্রম পরিদপ্তর পুনর্গঠন, জাতীয় শ্রম উপদেষ্টা বোর্ড গঠনসহ ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি মে দিবস পালনকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেন এবং সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে আইএলও এর সদস্যপদ লাভ করে।

বাণীতে তিনি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং দিবসটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শ্রমজীবী ও মেহনতি মানুষকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।