রূপপুর প্রকল্পের পরিচালনা রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানী সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত

রূপপুর প্রকল্পের পরিচালনা রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানী সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত

ছবি : সংবাদাতা

রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রসাটম বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করলো। রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচোভ সোমবার (মার্চ ১৬) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

আজ বুধবার (১৮ মার্চ) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বাংলাদেশ সফরকালে লিখাচোভ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.  কে. আব্দুল মোমেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

১৬ই মার্চ রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইতোপূর্বে বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত আন্তঃসরকারি চুক্তির সংশোধন সংক্রান্ত একটি প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন আলেক্সি লিখাচোভ এবং স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। চুক্তির ফলে বাংলাদেশ দীর্ঘ মেয়াদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১ ও ২ নম্বর ইউনিটের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত কাজের জন্য রাশান প্রতিষ্ঠানটিকে নিযুক্ত করতে পারবে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ এবং প্রকল্প পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট জনবল প্রশিক্ষণের জন্যও প্রতিষ্ঠানটিকে দায়িত্ব প্রদান করা যাবে। এর ফলে, রূপপুর প্রকল্পের পুরো আয়ুষ্কাল ধরে রসাটম রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা সংক্রান্ত সহযোগিতা এবং মেরামত কার্য সম্পাদনের সুযোগ লাভ করবে।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এবং রুশ প্রতিষ্ঠান টেভেল-এর মধ্যে সম্পাদিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য জ্বালানী সরবরাহ চুক্তির কিছু পরিশিষ্ট প্যাকেজও স্বাক্ষরিত হয়। এ সময়, রসাটম মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। রূপপুর প্রকল্পের অপারেশন লাইফটাইম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই চুক্তি বলবৎ থাকবে। উল্লেখ্য, রূপপুর এনপিপি হচ্ছে রাশিয়ার বাইরে নির্মীয়মান প্রথম ৩+ প্রজন্মের (এনপিপি-২০০৬) পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প যাতে ১৮ মাসের জ্বালানী সাইকেল প্রবর্তন করা হয়েছে।

লিখাচোভ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রূপপুর প্রকল্প সাইট এবং প্রকল্পে কর্মরত রুশ নাগরিকদের জন্য নির্মীত বিশেষ আবাসিক এলাকা গ্রীণ সিটি পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দলকে সাইটে কাজের অগ্রগতি এবং গ্রীণ সিটি’তে প্রাপ্ত বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। রসাটম মহাপরিচালক উল্লেখ করেন যে, “প্রকল্পে নির্মাণ কাজ যথেষ্ট দ্রুত গতিতেই এগোচ্ছে। গ্রীণ সিটিতে প্রাপ্ত বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা দেখে আমি খুশি হয়েছি, আমাদের বিশেষজ্ঞরা বিনোদন ও মেডিক্যাল সেবাসহ স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই এখানে পাচ্ছেন”।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক দু’টি ইউনিট নির্মীত হচ্ছে। প্রকল্পের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২,৪০০ মেগা-ওয়াট। রসাটমের প্রকৌশল শাখা এতমস্ত্রয়এক্সপোর্ট (এএসই)  জেনারেল কন্ট্র্যাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জাতীয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এর কঠোর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।