ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চেয়ারম্যানের আত্মহত্যা

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চেয়ারম্যানের আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন সুনামগঞ্জ দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরী (৫৬)।

স্ট্যাটাসের ২০ ঘণ্টা পর শনিবার রাত ৯টার দিকে মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া এলাকায় বিষ পান করেন তিনি। এরপর রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকায় স্থানীয় টহলরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।

ফেসবুকে স্ট্যাটাসে চেয়ারম্যান লেখেন, ‘আমি সুস্থ হয়ে এসে জানতে পারি হবিবুর ও জসিম উদ্দিনের মামলার রায় হয়ে গেছে। ওদের টাকা দিতে গিয়ে আজ আমি সব হারিয়ে পথে এসে দাঁড়িয়েছি, ওদের বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই। যাদের কাছে এই লেখা পাঠাচ্ছি, আপনাদের কাছে আমার মিনতি। আপনারা জুলুমকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। আমি হয়তো দেখতে পারব না। কিন্তু সমাজ আপনাদের কীর্তি দেখবে। বিদায়।’

তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। সুদের টাকার দু’টি মামলায় আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি দীর্ঘ দিন পলাতক ছিলেন বলে জানা যায়।

কমলগঞ্জ থানার এসআই মহাদেব বাছাড় জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে লাউয়াছড়া এলাকায় বিষ পান করে রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকেন সৌম্য চৌধুরী। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাই। কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তিনি রাত ১২টার পর মারা যান।

এদিকে চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরীর মৃত্যুর খবর ফেইসবুকে জানাজানি হলে সুদখোরদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও ক্ষোভ প্রকাশ করে নানা মন্তব্য করতে দেখা যায়। দিরাই থানা সূত্রে জানা যায়, আদালতের একটি মামলার সাজাসহ গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে তার নামে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদি জসীমউদ্দিন বলেন, আমি ১৯ লাখ টাকা দিয়েছিলাম চেয়ারম্যানকে। আদালতের রায়ে বর্তমানে আমি সৌম্য চৌধুরীর নিকট ২৯ লাখ টাকার পাওনাদার।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সৌম্য চৌধুরী। গত নির্বাচনে তিনি অংশ গ্রহণ করেননি।

দু’দিন আগে সৌম্য চৌধুরীর ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করেছিলেন, ‘গত ইউপি নির্বাচনে ওরা তিনজন আমাকে নির্বাচনে যাতে না যাই নানাভাবে আমার পথে কাটা বিছিয়ে রাখে। চিনু ঠাকুর, সজল, অসিত, পুতুল ওরা সিন্ডিকেট তৈরি করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সৌম্য চৌধুরীর লাশ বাড়িতে পৌঁছেনি।’