ইউএনএইচসিআরকে সতর্ক করল সরকার

ইউএনএইচসিআরকে সতর্ক করল সরকার

সংগৃহীত

বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে চীনের মধ্যস্থতায়। তবে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর)। আর এর অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে যেতে রাজি হওয়া ৪ পরিবারের ২৩ রোহিঙ্গার খাদ্য সহায়তা গত সোমবার বন্ধ করে দিয়েছিল সংস্থাটি। এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডার ক্লকে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে সতর্ক করে সরকার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, কী কারণে ও কোন প্রেক্ষাপটে ইউএনএইচসিআর ওই চার রোহিঙ্গা পরিবারকে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে সে বিষয়ে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধির কাছে জানতে চায় বাংলাদেশ। তবে ইউএনএইচসিআর আবার খাদ্য ও জরুরি সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। বন্ধের একদিন পর আজ মঙ্গলবার সেই সহায়তা দেওয়া আবারও শুরু হয়েছে। 

ইউএনএইচসিআরের যুক্তি, ওই চার রোহিঙ্গা পরিবারকে নোয়াখালীর ভাসানচর থেকে এনে কুতুপালংয়ে বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত প্রত্যাবাসন এলাকায় রাখা হয়েছে।

মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সফরের আগে ওই দলটিকে ভাসানচর থেকে আনা হয়েছিল। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে ওই রোহিঙ্গা দলটি উপস্থিত ছিল না। ওই দলটির ভবিষ্যৎ কী সে বিষয়ে ইউএনএইচসিআর জানতে চায়। ওই রোহিঙ্গারা ভাসানচরে নিবন্ধিত। খাদ্য সহায়তা পাওয়ার জন্য তাদের সেখানেই ফেরা উচিত বলে ইউএনএইচসিআর মনে করে। 

অন্যদিকে ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও টেকসইভাবে ফেরার জন্য মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দিচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরার যে কোনো সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ, বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে এবং স্বাধীনভাবে ও জেনে বুঝে নেওয়ার পক্ষে ইউএনএইচসিআর। 

মিয়ানমারে ফিরতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্তের আগে ইউএনএইচসিআরের ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি ক্লিমেন্টস কক্সবাজার সফর করেন। ওই সফরে তিনি কোনোভাবেই রোহিঙ্গাদের জোর করে ফেরত না পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে।

এদিকে কক্সবাজারে সরকারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি হওয়া ৪ পরিবারের ২৩ রোহিঙ্গাকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে।

অতিরিক্ত শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামছুদ্দৌজা নয়ন আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি নেহায়েত ভুল বোঝাবুঝি। কতদিনের জন্য এ ৪টি পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ দেওয়া হবে সেটা ইউএনএইচসিআর এর কাছে ধারণা না থাকায় এমন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’