বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন

বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন

বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন

এক যুগেরও বেশি সময় আগে বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি মামলায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।এই কেলেঙ্কারির ঘটনায় সবমিলিয়ে ৫৯টি মামলায় ১৪৭ জন আসামির বিরুদ্ধে এ অভিযোগপত্র অনুমোদন দিলো দুদক। অভিযোগপত্রে আসামিদের মধ্যে বাচ্চুসহ ব্যাংকের কর্মকর্তা ৪৬ জন। আর ১০১ জন গ্রাহক।

কমিশন সচিব মো: মাহবুব হোসেন সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বেসিক ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে সবকটি মামলার অভিযোগ অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। বিকেলের মধ্যেই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘মোট ৫৯টি মামলায় দুই হাজার ২৬৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুসহ ১৪৭ জনকে এজাহারভুক্ত করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহক।’

দুদক সচিব জানান, দুদকের পাঁচজন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলাগুলো তদন্ত করেন। তারা হচ্ছেন দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মো: মোনায়েম হোসেন, মো: গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং মোহাম্মদ সিরাজুল হক।জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার পাঁচ বছরে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।

এই বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্ত করে ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দুদকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর ১২০ জনকে আসামি করে মোট ৫৬টি মামলা করে দুদক।

সেসময় এসব মামলায় দুই হাজার ৩৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামসহ ২৭ কর্মকর্তা, ১১ জরিপকারী ও ৮২ ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। পরে আরো তিনটি মামলা করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

তবে সেসময় আলোচিত ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হলেও দুদকের কোনো মামলাতেই তাকে আসামি করা হয়নি। অনুসন্ধানকালে তাকে জিজ্ঞাসাবাদেও ডাকেনি দুদক।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের নিয়োগ করা নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে অনিয়মিত ঋণ মঞ্জুর, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা ছিল।

২০১৭ সালের আগস্টে এক মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদকে আসামি না করায় উষ্মা প্রকাশ করেন।পরে আদালতের এক আদেশের পর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে বাচ্চুকে প্রথমবারের মতো তলব করে দুদক। পরে বাচ্চুসহ বেসিক ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।