ক্ষুধা যেন মৃত্যুকেও ভুলিয়ে না দেয়

ক্ষুধা যেন মৃত্যুকেও ভুলিয়ে না দেয়

ফাইল ছবি

ভীতি নয়, সচেতনতা সৃষ্টি আর সামাজিক সঙ্গনিরোধ কর্মকেসূচি চলছে। যেন এগুলোকে অবহেলা না করি। সামাজিক মানুষ হিসেবে কয়েকটি প্রসঙ্গ বলা জরুরি মনে করছি--

১.খেটে খাওয়া দিন মজুর শ্রেণী ইতোমধ্যে নাকাল হয়ে পড়েছে। তারা ভিক্ষাকে অপছন্দ করেই খেটে খেতেন। এখন কাজ নেই। ঘরে খাবারও নেই। এরা আকাশের পাখির মতই জমিনে সঞ্চয়হীন মানুষ। এদের পূঁজি হলো ওদের মালিকের দেয়া কর্মক্ষমতা। এদেরই এক পূর্বসূরি নবীজিকে বলেছিলেন- হে দয়াল নবী! দাও কিছূ মোরে নহিলে পরাণে মরি।

২. সবজিওয়ালা, চাওয়ালা, ফুটপাথের দোকনী, টোকাই, মিনতি, বাসাবাড়ি, দোকান, কলকারখানার ছোট চাকুরিজীবিরা কেমন আছে? সামাজিক সঙ্গনিরোধে তাদেরকে বাড়ি পাঠিয়েছে। অথচ ওরা তো ক্ষুধার তাড়নায় দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে কাজ করতো, ছুটে এসেছিল-এই প্রাচুর্যের শহরে। ওরা এখন কী করছে , কী বলছে, একটু কান পেতে শুনুন। মানবতার মহান বন্ধু বলেছেন, ওদের খোঁজ না নিয়ে ঘুমালে মুমিন-ই হওয়া যাবে না।

৩. ভিক্ষুকশ্রেণী- যাদেরকে দেখে আমরা প্রতিনিয়ত বিরক্ত হয়েছি অথবা দয়া করেছি। আজ ক‘দিন ওরা নেই। কি করছে ঐ মলিন মুখগুলো! ওদের বাড়ানো হাতগুলোর মধ্যে আমার আপনার হাতকে কখনও চিন্তা করেছি? আমাদের দায়িত্বহীনতা অথবা কৃপণতা ওদেরকে ভিক্ষুক বানায়নিতো? আসমানের মালিক ওদের অধিকার দিয়েছিল আমাদের সম্পদে। এমন যেন না হয়-- দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ। জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে সে ঋণ পরিশোধে একটু মনোযোগী হলে কেমন হতো? 

ক্ষুধায় কদম চলতে চায় না, দৃষ্টি পথের সীমা পায় না- এমন অবস্থায় পড়ে এরা যেন মৃত্যুকে উপেক্ষা না করে বসে। তাহলে ভেঙ্গে পড়বে সামাজিক সঙ্গনিরোধ কর্মসূচি। আমরা সকলেই অনিরাপধ হয়ে যাব নিশ্চিতভাবেই। আর আখিরাতের জবাবদিহিতাতো বাদ-ই রইলো। যেভাবে ১ম ও ৩য় তৃতীয় বিশ্বের ব্যবধান একাকার করে দিয়েছে করোনা!!

লেখক:

ড. মীর মনজুর মাহমুদ