এবার গণ অধিকার পরিষদ থেকে নুর-রাশেদকে অব্যাহতি

এবার গণ অধিকার পরিষদ থেকে নুর-রাশেদকে অব্যাহতি

এবার গণ অধিকার পরিষদ থেকে নুর-রাশেদকে অব্যাহতি

গণ অধিকার পরিষদে রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের রেষারেষি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। এবার সংগঠনের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ও কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো: রাশেদ খানকে অব্যাহতি দিয়েছেন রেজা কিবরিয়াপন্থী নেতারা।

মঙ্গলবার (২০ জুন) রাতে গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার সই করা এবং পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য শাহাবুদ্দিন ‍শুভর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ অব্যাহতির কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গণ অধিকার পরিষদের গঠনতন্ত্র, ২১ দফা কর্মসূচি, লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং মূলনীতি বিরোধী কাজ করা, সরকারের সংবিধান, মানি লন্ডারিং আইন ও সন্ত্রাসবিরোধী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠা, ইসরাইলসহ বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার সাথে যোগাযোগ, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সভা আয়োজন, অবৈধভাবে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনোনয়ন করা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিষদের নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে সদস্য সচিব মো: নুরুল হককে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো।

একইসাথে এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করায় কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মো: রাশেদ খানকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলো। তাদের দুজনকেই দলের দফতর বরাবর আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে রেজা কিবরিয়া বলেন, একইসাথে আমি ড. রেজা কিবরিয়া, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে সাংগঠনিক ক্ষমতাবলে পরবর্তী নির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সদস্য সচিব হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও অধিকার পরিষদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা হাসান আল মামুনকে (মো: আল মামুন) ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত করছি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি এবং নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আন্দোলন বেগবান করার জন্য এসব নির্দেশনা দেয়া হলো।

এদিকে, গণঅধিকার পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক নুরের সাথে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের যোগাযোগ, আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ নানা কারণে বিরক্ত সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা। সর্বশেষ মোসাদের সাথে নুরুল হক নুরের টাকা লেনদেনের বিষয়টি সামনে এলে দলের অভ্যন্তরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তবে বিষয়টি নিয়ে নুরের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না থাকায় ভালোভাবে নেননি দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

পরে মঙ্গলবার (২০ জুন) দিনভর দফায় দফায় বৈঠক করেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা। সভায় সংগঠনটির বেশিরভাগ যুগ্ম আহ্বায়ক, যুগ্ম সদস্য সচিব এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করা ড. রেজা কিবরিয়া।

এর আগে, গত রোববার সন্ধ্যায় গুলশান ২ নম্বর সেক্টরের ৫৫ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়িতে দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠক বসে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়।

দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বৈঠকে আসেন সাড়ে ৮টার দিকে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রেজা কিবরিয়া। তিনি বলেন, ৭টার বৈঠকে কেন সদস্য সচিব সাড়ে ৮টায় উপস্থিত হবেন? এর পর থেকেই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় চলতে থাকে। যার রেশ থাকে শেষ পর্যন্ত। রাত ৯টা নাগাদ এক পর্যায়ে রাগ করে উঠে বাসায় চলে যান রেজা কিবরিয়া।

এ ঘটনায় সোমবার (১৯ জুন) রাতে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেন ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুর।