কর ফাঁকি মামলা : হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ড. ইউনূসের আপিল

কর ফাঁকি মামলা : হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ড. ইউনূসের আপিল

কর ফাঁকি মামলা : হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ড. ইউনূসের আপিল

দানের বিপরীতে ধার্য করা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি আয়করের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।বৃহস্পতিবার সকালে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো: মোস্তাফিজুর রহমান খান এ আবেদন করেন। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি করতে পারে।

এর আগে দান করা টাকার বিপরীতে আয়কর দাবি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ড. ইউনূসকে নোটিশ দিয়েছিল। সেটিকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে আবেদন করেছিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদ। সেই আবেদন খারিজ করে গত ৩১ মে হাইকোর্ট ইউনূসকে আয়করের টাকা পরিশোধ করতে হবে মর্মে আদেশ দেন। ওইদিন বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৩ মে এনবিআরের নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূসের করা তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলার শুনানি শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ ( এ এম) আমিন উদ্দিন। আর ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো.মোস্তাফিজুর রহমান খান।কর ফাঁকি নিয়ে এটিই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রথম রায়। রায়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতেই ট্রাস্ট করেছেন ড. ইউনূস। মৃত্যুভীতি থেকে টাকা দেয়াটা তার একটি কৌশল।

জানা গেছে, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ড. ইউনূসকে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ড. ইউনূস ২০১১-১২ করবর্ষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টারে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দান করেন। একইভাবে ২০১২-১৩ করবর্ষে ইউনূস ট্রাস্টে দান করেন আট কোটি ১৫ লাখ টাকা। ২০১৩-১৪ করবর্ষে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্টে দান করেন সাত কোটি ৬৫ হাজার টাকা।

এসব দানের বিপরীতে যথাক্রমে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০, এক কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার ও এক কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকাসহ মোট ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা আয়কর দাবি করে এনবিআর। একই সঙ্গে ৬৯ লাখ ২৬ হাজার ২৫৬ টাকা জরিমানাও করে।

জরিমানাসহ ইউনূসের কাছে এনবিআরের মোট পাওনা দাবি করে ১৬ কোটি আট লাখ ৪৩ হাজার ৫৬ টাকা। এর মধ্যে তিনি আয়কর পরিশোধ করেন তিন কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৮ টাকা।পরিশোধের এ টাকা বাদ দিলে জরিমানাসহ ইউনূসের কাছে এনবিআরের পাওনা দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৬০৮ টাকা।