মুফতি ফয়জুল করিমকে নিয়ে মন্তব্য : সিইসির দুঃখ প্রকাশ

মুফতি ফয়জুল করিমকে নিয়ে মন্তব্য : সিইসির দুঃখ প্রকাশ

মুফতি ফয়জুল করিমকে নিয়ে মন্তব্য : সিইসির দুঃখ প্রকাশ

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন এক মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলার বিষয়ে নিজের বক্তব্যে ‘উনি কি ইন্তেকাল করেছেন’ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। নিজের দেয়া কোনো বক্তব্যের কারণে কেউ মর্মাহত হলে তিনি তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

এর আগে গত ১২ই জুন বরিশাল সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের  মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা হওয়ায় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, বলা যাবে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেছিলেন, 'উনি কি ইন্তেকাল করেছেন।' তার এই বক্তব্যের পর নানা মহল থেকে সমালোচনার মুখে পড়েন কমিশন প্রধান।

আজ সোমবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলমের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিইসির বক্তব্য তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, গত ১২ই জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সাধারণ নির্বাচন-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর আনুমানিক বিকাল ৫টা সময় উপস্থিত সাংবাদিকগণকে ব্রিফ করার সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের পক্ষে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা ও রক্তাক্ত করার বিষয়ে সাংবাদিকদের উপর্যুপরি প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সাথে গণমাধ্যম কর্মীদের নিকট হতে বর্ণিত প্রার্থীর বর্তমান শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছেন। ওই বিষয়টি বিকৃতভাবে ও ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্ণিত প্রার্থীকে কটাক্ষ করেছেন এবং তার মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও নির্বাচন কমিশনকে হেয় প্রতিপন্ন করে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বক্তব্য প্রদান করছেন মর্মে নির্বাচন কমিশনের গোচরীভূত হয়েছে।

প্রকৃত বিষয় হলো- বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বর্ণিত প্রার্থীর ওপর আক্রমণ হওয়ার ঘটনা অবহিত হওয়া মাত্রই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণ দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাগণকে নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্বাচন কমিশনের উক্ত নির্দেশনার আলোকে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ তদন্তপূর্বক বর্ণিত বিষয়ে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করত: আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন মর্মে ১৪ জুন ২০২৩ তারিখে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। ওই প্রতিবেদনসমূহ পর্যালোচনায় দেখা যায়, ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে (১) মোঃ মঈনুল ইসলাম স্বপন ও (২) মোঃ জহিরুল ইসলাম রেজভীকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় উপর্যুক্ত ব্যক্তি ছাড়াও অন্যান্য অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে শনাক্তকরণসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে এবং উক্ত বিষয়টি নির্বাচন কমিশন সার্বক্ষণিক তদারকি করে যাচ্ছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সাথে এবং কোনো রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর প্রতি অনুরাগ বা বিরাগভাজন না হয়ে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি কখনো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিমের সুনাম ও সম্মানের হানি ঘটে এমন কোনো মন্তব্য করেননি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বর্ণিত প্রার্থীর মৃত্যু কামনা করেছেন মর্মে প্রচারিত সংবাদ ও বক্তব্য সম্পূর্ণ অলীক, মনগড়া, অনুমাননির্ভর ও ভ্রান্তধারণাপ্রসূত।

 অসত্য সংবাদ ও বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। তদুপরি, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কোনো মন্তব্য/বক্তব্যে কোনো ব্যক্তি মর্মাহত হলে তিনি তার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

সর্বোপরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রত্যাশা করে যে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীগণ সর্বোচ্চ সতর্কতা ও দায়িত্বশীলতার সাথে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত যে কোনো বক্তব্য ও সংবাদ প্রদান ও প্রচার করবেন এবং বর্ণিত অনুমাননির্ভর ওনভ্রান্তধারণাপ্রসূত মন্তব্য ও সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ হতে বিরত থাকবেন।