সমুদ্রের তলদেশ থেকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার

সমুদ্রের তলদেশ থেকে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার

সংগৃহীত

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে আটলান্টিককের গভীরে পাড়ি জমানো সাবমারসিবল টাইটানের কয়েক টুকরা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ১০ দিন পর বুধবার (২৮ জুন) টাইটানের ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রের তলদেশ থেকে উদ্ধার করে আনার ছবি প্রকাশ করে। খবর দ্য ইনডিপেনডেন্ট।

পর্যটকদের টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে গত ১৮ জুন আটলান্টিকে ডুব দেয়া সাবমার্সিবল টাইটান সমুদ্রের তলদেশে কাছাকাছি পৌঁছানোর পর ‘অন্তর্মুখী বিস্ফোরণে’ নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়। মারা যায় সেটিতে থাকা পাঁচ আরোহীর সবাই।

টাইটান সাবমার্সিবলে আরোহী হিসেবে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের, বিমান সংস্থা অ্যাকশন এভিয়েশনের চেয়ারম্যান হামিশ হার্ডিং (৫৮), পাকিস্তানের এংরো করপোরেশনের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ (১৯), ফরাসি পর্যটক পল অঁরি নারজিলে (৭৭) এবং ওশানগেইটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ (৬১)।

বুধবার (২৮ জুন) প্রকাশিত নাটকীয় ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ক্রুরা টাইটানের কয়েকটি টুকরো হরিজোন আর্কটিক শিপ থেকে সেন্ট জোন্সের নিউফাউন্ডল্যান্ডে কানাডার কোস্ট গার্ড ঘাঁটিতে নামিয়ে নিচ্ছে।

কানাডীয় উপকূলে আটলান্টিকের প্রায় ১৩ হাজার ফুট গভীরে পানির নিয়ে ঐতিহাসিক জাহাজ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ পড়ে হয়েছে। ১০০ বছরেরও বেশি আগে সেই ১৯১২ সালে নিজের প্রথম সমুদ্র যাত্রাতেই ডুবে যায় ওই সময়ের সর্ববৃহৎ জাহাজ টাইটানিক। মারা যায় দেড় হাজারের বেশি যাত্রী ও ক্রু।

ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়া সেই টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পর্যটকদের দেখাতে নিয়ে যেত ওশানগেইট নামে একটি পর্যটন সংস্থা। এজন্য জনপ্রতি আড়াই লাখ ডলার গুণতে হতো।

ওশানগেইটের ডুবোযান ছিল টাইটান। গত ১৮ জুন ডুব দেয়ার প্রায় এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর পানির উপরে থাকা নিয়ন্ত্রক জাহাজের সঙ্গে সেটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকেই টাইটানের অনুসন্ধানে সমুদ্রের তলদেশে প্রায় আড়াই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে সেটির অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার টাইটানের ধ্বংসাবশেষের কাছেই টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় সাগরের তলদেশে পাঠানো একটি রিমোট অপারেটিং ভেহিকলও (আরওভি)।

কানাডিয়ান জাহাজ হরাইজন আর্কটিক টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে সামুদ্রিক তল অনুসন্ধানের জন্য একটি রিমোট কন্ট্রোল চালিত যান বা আরওভি ব্যবহার করেছে। পেলাজিক রিসার্চ সার্ভিসেস, ম্যাসাচুসেটস এবং নিউ ইয়র্কের অফিসসহ একটি সংস্থা যা আরওভির মালিক এটি বুধবার (২৮ জুন) এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা অফশোর অপারেশন সম্পন্ন করেছে।

পেলাজিক রিসার্চ সার্ভিসেস বলেছে যে তার দল 'এখনও মিশনে রয়েছে' এবং চলমান টাইটান তদন্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছে না কারণ বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা জড়িত।

কোম্পানির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'তারা এই অপারেশনের শারীরিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে এখন দশ দিন ধরে কাজ করছে। মিশনটি শেষ করতে এবং তাদের প্রিয়জনের কাছে ফিরে যেতে তারা উদ্বিগ্ন।'

কোস্ট গার্ড প্রতিনিধিরা বুধবার তদন্ত বা ধ্বংসাবশেষ তীরে ফিরে আসার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড এবং কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের প্রতিনিধি উভয়ই তদন্তের সঙ্গে জড়িত। তারাও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের মুখপাত্র লিয়াম ম্যাকডোনাল্ড বলেন, 'তদন্ত চলমান থাকায় আমরা এই মুহূর্তে কোনো অতিরিক্ত তথ্য দিতে পারছি না।'