বৃষ্টির মধ্যেই উদযাপিত হচ্ছে ঈদ

বৃষ্টির মধ্যেই উদযাপিত হচ্ছে ঈদ

সংগৃহীত

প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই সারা দেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। জাতীয় ঈদগাহসহ সারা দেশের ঈদগাহ ও মসজিদে ঈদের জামাত হয়েছে। এখন কোরবানিও চলছে।

আজ ঈদের দিন বৃষ্টি যে থাকবে, তা আগেই বোঝা গিয়েছিল। সকাল থেকেই দেশের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টি নেমেছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সাথে দমকা হওয়া বয়ে যেতে যাচ্ছে। তবে বিকেলের দিকে বৃষ্টি কিছুটা কমে আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সন্ধ্যায় আবার বৃষ্টি বাড়তে পারে।

তবে তাপমাত্রার ক্ষেত্রে স্বস্তির খবর দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, ঈদের দিন দেশের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে এবং ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

কোথায় কেমন বৃষ্টি
বাংলাদেশের ওপরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।

কোথাও কোথাও ভারী, অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ বিভাগে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। এই দুই বিভাগে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি এবং কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদেরা আগেই জানিয়েছিলেন, ঈদের দিন উত্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম হতে পারে, তবে সামনের দিনগুলোয় সেখানে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে এবং সেখানে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

দক্ষিণের চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে এমনিতেই গত কয়েক দিন ধরেই প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে যা সামনের দিনগুলোয় অব্যাহত থাকবে। ঈদের দিনও ওইসব বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

ঢাকাসহ বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় গত কয়েক দিন ধরেই থেমে থেমে কম-বেশি বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টির এই প্রবণতা আগামী তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক আজিজুর রহমান।

কেন এই বৃষ্টি
বঙ্গোপসাগরের ওপর প্রবল মৌসুমি বায়ু অবস্থানের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুন্দ্রবন্দরগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এ সময় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়ে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান। এমনিতেই অবশ্য বছরের এই সময়ে সারা বছরের ৭৩ ভাগ বৃষ্টি হয় বলে তিনি জানান।

বর্তমানে বর্ষাকালে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপরে অবস্থান করছে এবং বেশ সক্রিয় অবস্থায় আছে। কারণ মৌসুমি বায়ু সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প বয়ে এনে বাংলাদেশের ওপর জড়ো হয়েছে।

এর প্রভাবে সারা দেশব্যাপী গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ মিলিমিটার আবার কোথাও কোথাও ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন মি. রহমান।

সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে চট্টগ্রামের মাইজদী কোর্ট, সন্দ্বীপে, পটুয়াখালী, হাতিয়াসহ উপকূলীয় জেলাগুলোয়।

আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ বুলেটিনেও দেশের অধিকাংশ স্থানে বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা ছিল ৭৬-১০০ শতাংশ। বুধবার ভোর ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।

ওই বুলেটিন অনুযায়ী, আটটি বিভাগের ৪৪টি জেলার মধ্যে দিনাজপুর ছাড়া বাকি ৪৩ জেলাতেই বৃষ্টিপাত হয়েছে।

গরম কেমন থাকবে
তবে তাপমাত্রার ক্ষেত্রে স্বস্তির খবর দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা বলছেন, ঈদের দিন দেশের তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে এবং সহনীয় অবস্থাতেই থাকবে।

বৃষ্টিপাত চলমান থাকলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।

তবে বৃষ্টিপাত কমে গেলে রোদ উঠলে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। কেননা জলীয় বাষ্প তখনও বেশি থাকবে। ফলে তাপমাত্রা যা দেখাবে তার চাইতে গরম অনুভূত হবে বেশি।

সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এক থেকে দুই ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি তারতম্য হবে না।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সৈয়দপুরে ৩৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ২৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সূত্র : বিবিসি ও অন্যান্য