হলি আর্টিজান হামলার ৭ বছর আজ

হলি আর্টিজান হামলার ৭ বছর আজ

সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ৭ বছর আজ । ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারীটিতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জন।

সেদিন ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস জঙ্গি হামলার ভয়াবহতার সাক্ষী হয়েছিল গোটা জাতি। পরে দোসরা জুলাই সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ অপারেশনের মাধ্যমে অবসান হয় জিম্মিদশার, নিহত হয় হামলাকারী ৫ জঙ্গি।

২০১৯ সালের ২৭শে নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করে। তবে এই জঙ্গি হামলার মামলা হাইকোর্টে তিন বছরেও শুরু হয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনউদ্দিন জানিয়েছেন, করোনার কারণে দেরি হয়েছে, এখন দ্রুত শুনানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এদিকে, হামলায় নিহতদের স্মরণে সকাল থেকে স্বজন ও বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জড়ো হন হলি আর্টিজানের ঘটনাস্থলে।

এদিকে ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে জঙ্গিদের নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞের ব্লু-প্রিন্ট। বিভিন্ন সময় এই হামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজসের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হামলায় জড়িত জঙ্গিরা সবাই ‘হোম গ্রোন’। জেএমবির কিছু সদস্য নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়ে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়, যাদের ‘নব্য জেএমবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

নব্য জেএমবির সদস্যদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকলেও হলি আর্টিসানের ঘটনার পর ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিদের রুখে দিতে সক্ষম হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব অভিযানে অনেক নব্য জেএমবির সদস্য নিহত হয়। গ্রেফতার করা হয় আরও অনেককে।

তবে হলি আর্টিসানে নৃশংস জঙ্গি হামলার ৭ বছরেও শেষ হয়নি মামলার বিচার প্রক্রিয়া। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর এই মামলায় ৭ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাসের রায় দেন আদালত। এরপর আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে, আর রায়ে খালাস পাওয়া একজনের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর প্রায় দীর্ঘ ১৯ মাস পেরিয়ে গেলেও উচ্চ আদালতে বিচারিক কার্যক্রমের আর তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।

রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হামলার মূল সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।

তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করে বিচারিক আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেয়া হয়।