পাইপলাইনের মাধ্যমে গভীর সমুদ্র থেকে তেল খালাস শুরু

পাইপলাইনের মাধ্যমে গভীর সমুদ্র থেকে তেল খালাস শুরু

সংগৃহীত

দেশে প্রথমবারের মতো গভীর সমুদ্রে জাহাজ থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বা ক্রুড অয়েল উপকূলে নির্মিত অয়েল ট্যাংকারে খালাসের কাজ আজ সোমবার শুরু হবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে নতুন যুগের সূচনা হবে।

জানা গেছে, গত ২৪ জুন সৌদি আরব থেকে ‘এমটি হুরে’ জাহাজযোগে ৮২ হাজার মেট্রিক টন অ্যারাবিয়ান লাইট ক্রুড অয়েল মহেশখালীর গভীর সমুদ্র উপকূলে এসে পৌঁছায়। পরের দিন উক্ত স্থানে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের (এসপিএম) মাধ্যমে জাহাজ থেকে পাইপের মধ্য দিয়ে উপকূলের ট্যাংকারে পৌঁছানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। 

উল্লেখ্য, এসপিএমের সঙ্গে দুটি পাইপলাইনের সাহায্যে উপকূলের রিজার্ভারের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে, যার একটি দিয়ে ক্রুড অয়েল ও অন্যটি দিয়ে ডিজেল খালাস করা হবে। একইভাবে উপকূলে ক্রুড অয়েল ও ডিজেলের জন্য দুটি আলাদা ট্যাংকার নির্মাণ করা হয়েছে।

গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাসের এ প্রক্রিয়া সম্পর্কে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের জানান, স্মার্ট টেকনোলজির মাধ্যমে গভীর সমুদ্র থেকে জ্বালানি তেল ভূমিতে সরবরাহ শুরু করা হবে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এটি একটি নতুন পদক্ষেপ। এর ফলে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা পাবে।

জানা গেছে, এসপিএম থেকে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসংলগ্ন এলাকায় নির্মিত ট্যাংকে আমদানিকৃত ক্রুড অয়েল সংরক্ষণ করা হবে। ট্যাংক এলাকা থেকে গভীর সমুদ্র পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দূরে এসপিএম বয়া স্থাপন করা হয়েছে। ক্রুড অয়েলের ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৩০ হাজার টন এবং ডিজেল ট্যাংকের ধারণক্ষমতা ৮০ হাজার টন। কিছুদিনের মধ্যে ডিজেলবাহী জাহাজও আসবে।

উপকূলীয় দুটি ট্যাংক থেকে দুটি পাইপের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারী পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। মাতারবাড়ী থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারি পর্যন্ত স্থাপিত পাইপলাইন সমুদ্র তীরবর্তী ও সমতল এলাকায় মাটির নিচে দিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ৫৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে চীনের চায়না পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন কোম্পানি পাইপলাইনের কাজ সম্পন্ন করে। এর উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান ছিল জার্মানির আইএলএফ নামক প্রতিষ্ঠান। চায়নার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়।