ইরাকিরা নাকাল ওষুধ আর চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বগতিতে

ইরাকিরা নাকাল ওষুধ আর চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বগতিতে

ছবিঃ সংগৃহীত।

চলমান অর্থনৈতিক মন্দায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকে নিত্যপণ্যের সাথে বেড়েছে চিকিৎসা ব্যয়ও। ওষুধসহ চিকিৎসা খরচের ঊর্ধ্বগতিতে নাকাল নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে বাধ্য হয়ে এলোপ্যাথি ছেড়ে অনেকেই ঝুঁকছেন ভেষজ চিকিৎসার দিকে। খবর রয়টার্সের।

একসময় মধ্যপ্রাচ্যের সেরা চিকিৎসা পাওয়া যেতো ইরাকে। তুলনামুলক কম খরচে মিলতো বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা। মার্কিন আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় বিপর্যস্ত এই দেশটিতে এখন চিকিৎসা ব্যয় আকাশছোঁয়া। ডাক্তারের ভিজিট দিয়ে ওষুধ কেনার টাকা নেই বেশিরভাগ মানুষেরই। এ অবস্থায় বিকল্প চিকিৎসার দিকে ঝুঁকছেন নিম্নআয়ের মানুষরা।

যদিও ইরাকের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যেই মিলছে চিকিৎসা। তবে সেখানে নেই পর্যাপ্ত ওষুধ, প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। উচ্চবিত্তরা বেসরকারি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যেতে পারলেও নিরুপায় নিম্নবিত্তরা।

উম মোহাম্মদ নামের এক ইরাকি গণমাধ্যমকে জানান, আমার ত্বকের সমস্যা। ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। প্রেসক্রিপশন নিতেই আমার ৮ লাখ দিনার খরচ হয়েছে। এতো টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখালে আমি ওষুধ কী দিয়ে কিনবো। তাই, বাধ্য হয়ে ভেষজ ওষুধ নিতে এসেছি। সুস্থ্য হবো কি না জানি না। কিন্তু, এই মুহূর্তে এটা ছাড়া আমার আর অন্য কোনো উপায় নেই।

এদিকে, চিকিৎসা ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতির কারণে গেলো কয়েক বছরে ইরাকের হারবাল সেন্টারগুলোতে বেড়েছে রোগীর ভিড়। গত ৩ বছরে শুধু বাগদাদেই হারবাল রেমিডি সেন্টার বেড়েছে শতাধিক।

মোহাম্মদ শোবি নামের এক ভেষজ ওষুধ বিক্রেতা বললেন, এখানে অনেক ধরনের ভেষজ আছে। এগুলোই ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যাদের একেবারেই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার ও বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল টেস্ট করার সামর্থ্য নেই তারাই আমার ক্রেতা।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার মোটেও নতুন নয়। প্রাচীনকাল থেকেই নানা প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রতিকারক হিসেবে। তবে এগুলোর নির্দিষ্ট মাত্রা বা ডোজের ব্যাপারে সাবধান হওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

ইরাকের জাতীয় ভেষজ চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান ডা. হায়দার সাবাহ বলেন, আমাদের সমাজে ওষধি গাছের ব্যবহার প্রচলন বহু পুরোনো। ইরাকে যে সমস্ত হারবাল ফার্মেসি আছে তার বেশিরভাগই পুরোনো। বংশ পরম্পরায় তাদের ব্যবসা চলছে। এদের মধ্যে অনেকেরই বৈধ লাইসেন্স নেই। আর তাই, এ ধরনের চিকিৎসা নেয়ার সময় সতর্ক থাকা জরুরি।

প্রসঙ্গত, এই পরিস্থিতির সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী লাইসেন্স ছাড়াই কাজ করছেন হারবাল চিকিৎসক হিসেবে। এজন্য এ সেক্টরে নজরদারি আরও বাড়ানো উচিৎ বলে মনে করছেন ইরাকের স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টরা।