সুইডেনে কুরআন অবমাননায় ভারতের নিন্দা

সুইডেনে কুরআন অবমাননায় ভারতের নিন্দা

সংগৃহীত

সুইডেনে পবিত্র কুরআন অবমাননার প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় বিদ্বেষের নিন্দা জানিয়েছে ভারত। এর বিরোধিতা করে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে (ইউএনএইচআরসি)। তাতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটি।

শুক্রবার ভারত-ভিত্তিক বাংলা সংবাদমাধ্যম পুবের কলমের প্রিন্ট সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানানো হয়।

পত্রিকাটি জানায়, ভারতে ২০ কোটির বেশি মুসলিম রয়েছে। তাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠলেও পবিত্র কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘে নিন্দা জানিয়েছে ভারত। জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে নিন্দা প্রস্তাবটি পেশ করেছিল পাকিস্তান। তাতে ভারত নিন্দা প্রস্তাব সমর্থন করল।

পুবের কলমে দাবি করেছে- বর্তমানে মুসলিম দেশগুলোর সাথে ভারতের বেশ ভালো সম্পর্ক। তাছাড়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোদি মাঝেমধ্যেই আরব দেশগুলোতে সফরে যাচ্ছেন। শনিবার ফের সফর করবেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। পাশাপাশি ভারত সফরে এসেছেন মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের প্রধান শায়খ আল ঈসা। তিনি মোদির সাথে বৈঠকও করেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে মুসলিমদের প্রতি যেমন আচরণই হোক, মুসলিম বিশ্ব ও বিশ্বমঞ্চে মোদি সরকার তার ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে কোনো কমতি করছে না। তবে উল্লেখের বিষয়, ব্রিটেন, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ কয়েকটি দেশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। ১২টি দেশ এর বিরোধিতা করলেও ২৮টি দেশের সমর্থনে প্রস্তাবটি পাস হয়।

মানবাধিকার কমিশনার ভোলকার তুর্ক বলেন, কুরআনের ওপর কোটি কোটি মানুষ বিশ্বাস রাখেন। পবিত্র গ্রন্থটি পুড়িয়ে ক্রোধ উসকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। ইউরোপে কুরআন অবমাননা যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বুধবার পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রশ্নে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার জন্য জন্য জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার প্রধানের প্রতি আহ্বান জানানো হয় এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের অনুরোধ করা হয়।
প্রতিরোধের জন্য ওআইসি-র পক্ষ থেকে পাকিস্তান প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। পাকিস্তান, ইরান ওআইসিভুক্ত দেশগুলো স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে পবিত্র কুরআন পোড়ানোতে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ওই ঘটনার প্রেক্ষাপটে জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে বিতর্ক আয়োজনের প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে যা দেখতে পাচ্ছি তা হলো- ধর্মীয় বিদ্বেষের প্রতি উসকানি, বৈষম্য এবং সহিসংতা সৃষ্টির জন্য প্ররোচনার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রস্তাবটির পক্ষে ২৮টি দেশ, বিপক্ষে ১২টি দেশ ভোট দেয়। ভোট দানে বিরত ছিল ৭টি দেশ। পক্ষে ভোট দিয়েছে ভারত, পাকিস্তান, আলজেরিয়া, আর্জেন্টিনা, চীন, বাংলাদেশ, কাজাখস্তান, কাতার, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউক্রেন।

অন্যদিকে বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ব্রিটেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম, আমেরিকা, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ফিনল্যান্ড, জার্মানির মতো দেশ।