দেশে প্রথমবার উটপাখির ডিম থেকে ফুটল বাচ্চা
ছবিঃ সংগৃহীত।
দেশে প্রথমবারের মতো উটপাখির ডিম থেকে ৯৪৮ গ্রাম ওজনের বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘদিনের গবেষণায় ইনকিউবেটরের মাধ্যমে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চাটি উৎপাদন করেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(হাবিপ্রবি) একদল গবেষক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগের গবেষণাগারে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর ওপর গবেষণারত রয়েছে হাবিপ্রবির একদল গবেষক। ইনকিউবেটরে দেড় মাস আগে ১৯টি উটপাখির ডিম বসানো হয়েছিল। গত মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ওই ডিমগুলোর মধ্য থেকে একটি ডিম থেকে বাচ্চা ফুটেছে।
গবেষণাটিতে জড়িত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্স অনুষদের জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এ গাফফার মিঁয়া, বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রাশেদুল ইসলাম, সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন জেনেটিক্স অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. উম্মে সালমা, ডেইরি অ্যান্ড পোল্ট্রি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. কামরুজ্জামান (মিঠু) এবং এনাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. খাদিজা আল ফেরদৌস। এছাড়াও ছিলেন প্রোডাক্টিভ অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ পাওয়ার সেন্স অব অস্ট্রিস ইন বাংলাদেশ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত পিএইচডির ছাত্র খন্দকার তৌহিদুল ইসলাম, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. মুশফিক রহমান ও উটপাখির খামারি এলমিস অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী সুলতান ইফতেখার ওয়ালী।
মূলত, রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এ গাফফার মিঁয়া ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২১টি উটপাখির বাচ্চা এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ভবন সংলগ্ন এক বিঘা জমিতে খামার স্থাপন করে গবেষণা শুরু করেন। সেখানকার উটপাখির ডিম থেকেই সফলভাবে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাহলযুক্ত পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের গবেষণায় ব্যাঘাত ঘটা থেকে মুক্ত রাখার জন্য ২০২১ সালে খামারি ও ব্যবসায়ী সুলতান ইফতেখার ওয়ালীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। সেই থেকে দিনাজপুর জেলার সদর উপজেলার রাণীগঞ্জ মোড়ে নিরাপদ পরিবেশে খামারে উটপাখিগুলো অবস্থান করছে।
ইনকিউবেটরের মাধ্যমে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যাপক ড. এম এ গাফফার মিঁয়া বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো সফলভাবে আমাদের ক্যাম্পাস থেকে উটপাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে উটপাখির বংশ বিস্তারে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হলো।
তিনি আরও জানান, একটি উটপাখির বাচ্চা আমদানিতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমান পদ্ধতিতে আমরা উটপাখির বাচ্চা এভাবে উৎপাদন করতে পারলে তা ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে গবেষণা ও আগ্রহী খামারিদের মাঝে দেয়া সম্ভব হবে।