দিল্লির ত্রাণ শিবিরে বন্যার পানি, খাবার ও পানির সংকট

দিল্লির ত্রাণ শিবিরে বন্যার পানি, খাবার ও পানির সংকট

ফাইল ছবি

প্রবল বৃষ্টির জেরে যমুনা নদীর পানি বেড়ে সৃষ্ট বন্যায় ভারতের রাজধানী দিল্লির অসংখ্য সড়ক ভেসে যাওয়ার কারণে নজিরবিহীন সংকট তৈরি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে আশ্রয় নিতে হয়েছে দিল্লির অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরগুলোতে। পুরনো দিল্লির যমুনা বাজার ত্রাণ শিবিরের সব তাঁবুতে পানি ঢুকে পড়ায় সেখানে আশ্রয় নেয়া লোকজনকে এখন বাধ্য হয়ে শুকনো এলাকা খুঁজতে হচ্ছে।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে কোথাও কোথাও ত্রাণ শিবিরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রিতদের দুর্ভোগও বেড়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

বন্যাদুর্গতদের জন্য দিল্লির সরকার প্রায় ২ হাজার ৭০০ তাঁবু স্থাপন করেছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকতে এখন পর্যন্ত ২৭ হাজারের মতো মানুষ নিবন্ধন করেছে বলে সরকারি এক বিবৃতিতে জানানোও হয়েছে।

দিল্লির অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আসা এক ব্যক্তি বলেন, খাবার পানি নেই, আমরা এখানে বসে আছি। শেষ খেয়েছিলাম গতকাল সকালে, আমাদের কাছে যা ছিল তা দিয়েই খাবার তৈরি করেছিলাম। ত্রাণ শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে খাবার ও পানি জোগাড়েও লড়তে হচ্ছে। কোথাও কোথাও খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

দিল্লি এবং ভারতের উত্তরের রাজ্যগুলোতে টানা কয়েকদিনের অস্বাভাবিক বৃষ্টির পর বৃহস্পতিবার যমুনা নদীর পানি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছিল। পরে তা ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলেও দিল্লির বিভিন্ন অংশ এখনও পানিবন্দি।

শনিবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে ফের বৃষ্টি শুরু হওয়ায় কোথাও কোথাও পানি নতুন করে বাড়ছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, যমুনা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমছে, বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তবে বন্যার বিপদ এখনও কাটেনি।

এর মধ্যে রাজধানীতে বন্যা নিয়ে দোষারোপের রাজনীতিও শুরু হয়ে গেছে। শহরটিতে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি একে অপরকে এ দুর্যোগময় পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছে। দিল্লির মানুষকে দুর্ভোগে ফেলতে হরিয়ানা রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের ষড়যন্ত্রে এমন বন্যাসদৃশ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আম আদমি পার্টি।

এদিকে, রোববার সকাল থেকে দিল্লির বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে ভয়াবহ যানজট। পানির ভিতর দিয়ে গাড়ি চলতে পারছে না। ফলে শহরটির গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। আইটিও, রাজঘাট এলাকা এখনও পানির নিচে।

কর্মকর্তারা বলছেন, রাতদিন সুপ্রিম কোর্ট এলাকা থেকে পানি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা চলছে। শনিবার রাতে ভারি বর্ষণে যমুনার পানি ফুলেফেঁপে উঠেছে। এতে পানির লেভেল রেকর্ড করা হয়েছে ২০৬। রোববার সকাল ৬ টায় তা ছিল ১৪ মিটার। গত সপ্তাহ থেকেই এই নদী বিপদসীমায় প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর রেকর্ড অতিক্রম করেছে ২০৮.৬৬ মিটার। ১৯৭৮ সালের ২০৭.৪৯ মিটার অতিক্রম করে ।