ইউক্রেনের শস্য রফতানি ইস্যুতে বিভক্ত ইউরোপ

ইউক্রেনের শস্য রফতানি ইস্যুতে বিভক্ত ইউরোপ

ফাইল ছবি

রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে সাহায্য করছে ইউরোপীয় দেশগুলো। লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। তবে সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রফতানি চুক্তি স্থগিত করেছে রাশিয়া। এরপর এ বিষয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো।

এছাড়া ইউক্রেনের শস্যের কারণে নিজেদের উৎপাদিত শস্যের দাম পড়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেছে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ। এদের মধ্যে রয়েছে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, রোমানিয়া বুলগেরিয়া এবং পোল্যান্ড। তারা যুক্তি দিয়ে বলেছে, ইউক্রেনের সিরিয়ালগুলি স্থানীয় বাজারে বন্যার মতো ছেয়ে গেছে এবং সেগুলো আমাদের নিজেদের ফসলের বাজার দখল করে ফেলছে।

শস্য নিয়ে অচলাবস্থার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিভক্ত হয়ে গেছে ২৭ সদস্যের ব্লক ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে বেশ জোরেশোরে একত্রিত হয়েছিল ব্লকটি। এই বিভক্তি ইইউতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর ভয়েস অব আমেরিকার

ব্রাসেলসভিত্তিক জার্মান মার্শাল ফান্ড এবং ওয়াশিংটনভিত্তিক পিটারসন ইনস্টিটিউটের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সিনিয়র ফেলো জ্যাকব কিরকেগার্ড বলেন, 'আমরা এখন যা দেখছি তা হলো পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলো ইউক্রেনের জন্য তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থনের বিপরীতে অর্থনৈতিক প্রভাবকে বিবেচনায় নিচ্ছে।'

কৃষ্ণসাগর রুটে ইউক্রেনের শস্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় রেল এবং সড়ক দিয়ে 'সংহতি রুট' সম্প্রসারণের উপায়গুলো খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার ব্রাসেলসে বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৃষিমন্ত্রীরা।

ইউরোপীয় কমিশন পাঁচটি বাল্টিক সমুদ্র বন্দর দিয়ে শস্য রফতানি করার জন্য লিথুয়ানিয়ার একটি পৃথক প্রস্তাবও বিবেচনা করছে। পাঁচটি দেশ এখন চায়, গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হওয়া চুক্তিটি চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হোক।

পোলিশ কৃষিমন্ত্রী রবার্ট টেলাস মিডিয়া ওয়েবসাইট ইউরাকটিভকে বলেছেন, 'আমি আশা করি মেয়াদ বাড়ানো হবে। কিন্তু যদি তা না হয়, পোল্যান্ডকে এখনও সমস্যাটি মোকাবেলা করতে হবে। আমরা দেখিয়েছি যে, আমরা তা করতে সক্ষম।'

কমিশন বলেছে, সেপ্টেম্বরের সময়সীমার আগে তারা তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক সদস্য, যে কোনো মেয়াদ বৃদ্ধির বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, 'এটি ইউক্রেনের জন্য ইইউ সংহতিকে ক্ষুণ্ন করবে, একমাত্র যিনি খুশি, তিনি হলেন [রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট] ভ্লাদিমির পুতিন।'

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেনীয় শস্য রফতানির উপর বিধিনিষেধ বাড়ানোর চাপের সমালোচনা করেছেন। তিনি মঙ্গলবার সান্ধ্যকালীন ভাষণে বলেন, এটা 'অগ্রহণযোগ্য' এবং 'ইউরোপীয় আচরণ নয়' ।