রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ভারতকে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ভারতকে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

সংগৃহীত

রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ভারতকে হারাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রবিবার পাঁচ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২ উইকেটের জয় তুলে নেয়  ক্যারিবিয়ানরা। এর সুবাদে সিরিজে স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

জয়ের জন্য ৩০ বলে প্রয়োজন ২৬ রান। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে। মোড় ঘুরল ইয়ুজভেন্দ্র চাহালের এক ওভারে। তিন উইকেট তুলে নিয়ে ক্যারিয়ানদের ব্যাকফুটে নিয়ে যায় ভারতীয় স্পিনার। এতে ক্যারিয়ানদের পরাজয়ের শঙ্কা জাগে। তবে শেষ পর্যন্ত বিপদ সামলে দলকে দারুণ জয় এনে দেন আকিল হোসেন ও আলজারি জোসেফ। ৭ বল বাকি থাকতেই ১৫৩ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেন স্বাগতিকরা। 

গায়ানায় ধীরগতির উইকেটে দুই দলের ব্যাটসম্যানদেরই বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তবে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম নিকোলাস পুরান। শেষ দিকে রোমাঞ্চ ছড়ালেও, আগেই তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের ভিত গড়ে দেন। 

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দশম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ৪০ বলে ৬৭ রান করেন বাঁহাতি কিপার-ব্যাটসম্যান। তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

শেষের মতো রান তাড়ায় স্বাগতিকদের শুরুটাও তেমন ভালো ছিল না। প্রথম ওভারেই ব্র্যান্ডন কিং ও জনসন চার্লসকে ফেরান হার্ডিক পান্ডিয়া। আরেক ওপেনার কাইল মেয়ার্সকেও পাওয়ার প্লেতেই থামান আর্শদিপ সিং।

শুরুতেই বড় ধাক্কা খাওয়া দলকে কক্ষে ফেরাতে পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন পুরান। ষষ্ঠ বলে লং অন দিয়ে মারেন বিশাল ছক্কা। দুই বল পর দারুণ কাট শটে বল পাঠান সীমানায়।

পঞ্চম ওভারে মুকেশ কুমারের বলে পরপর দুটি চার মারেন বাঁহাতি মারকুটে ব্যাটসম্যান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে রবি বিষ্ণই’র ওপর দিয়ে বইয়ে দেন ঝড়। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ওই ওভার থেকে আসে ১৮ রান।

পাওয়ার প্লেতে ৬০ পেরিয়ে পুরান, রভম্যান পাওয়েলের জুটিতে এগোতে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় স্পেলে আক্রমণে ফিরে ১৯ বলে ২১ রান করা পাওয়েলকে আউট করেন পান্ডিয়া। ভাঙে ৫৭ রানের জুটি। 

অধিনায়কের ফেরার আগেই স্রেফ ২৯ বলে ফিফটি করেন পুরান। এরপর শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গে জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন জয়ের আরও কাছে। বিষ্ণই দ্বিতীয় স্পেলে ফিরলে আরও একটি ছক্কা মারেন পুরান।

১১ ওভার শেষে জয়ের জন্য চাহিদা নেমে আসে বলপ্রতি ১ রানে। পরের দুই ওভারে পুরান ও হেটমায়ার একটি করে ছক্কা মারলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৩৭ বলে ২৭ রানের। 

তখন পুরানের ঝড় থামান মুকেশ। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কভার পয়েন্ট দিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন ক্যারিবিয়ান কিপার-ব্যাটসম্যান। সমাপ্তি ঘটে তার ৬ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংসের।

এক ওভার পর ঘটে নাটকীয়তা। চাহালের প্রথম বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন রোমারিও শেফার্ড। দুই বল পর স্টাম্পড জেসন হোল্ডার। দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে শেষ বলে এলবিডব্লিউ ২২ রান করা হেটমায়ার।

হঠাৎ তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এরপর আর তেমন কোনও সুযোগ দেননি আকিল ও জোসেফ। দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৭ বলেই বাকি রান করে ফেলে স্বাগতিকরা। 

আকিল ২ চারে ১০ বলে ১৬, জোসেফ ১ ছক্কায় ৮ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। 

প্রথমভাগে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতের শুরুটাও ছিল বাজে। চার ওভারের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফেরেন শুভমান গিল ও সুরিয়াকুমার যাদব। পাওয়ার প্লেতে আসে ৩৪ রান।

শুরুর ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে ৪২ রানের জুটি গড়েন ইশান কিষান ও তিলক ভার্মা। তবে রানের গতি বাড়াতে পারেননি তারা। 

দশম ওভারে রোমারিও শেফার্ডকে ছক্কা মারার পরের বলেই বোল্ড হন ২৩ বলে ২৭ রান করা কিষান। পাঁচ নম্বরে নামা সাঞ্জু স্যামসনও হতাশ করলে ফেরা চাপে পড়ে ভারত।

পঞ্চম উইকেটে ২৭ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন তিলাক ও পান্ডিয়া। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা তিলাক পঞ্চাশ করেন ৩৯ বলে। তবে এরপর আর টিকতে পারেননি। 

আকিলের শর্ট লেংথ ডেলিভারি ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ দেন তিলাক। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪১ বলে করেন ৪১ রান। ২ ছক্কায় ১৮ বলে ২৪ রান করে আউট হন পান্ডিয়া।

শেষ দিকে আকসার প্যাটেলের ১২ বলে ১৪ ও বিষ্ণই, আর্শদিপদের ছোট দুটি ইনিংসে দেড়শ পেরোয় ভারত। যা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

একই মাঠে সোমবার তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।