ব্রিকলেনের দেয়ালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শ্লোগান নিয়ে তুমুল বিতর্ক

ব্রিকলেনের দেয়ালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শ্লোগান নিয়ে তুমুল বিতর্ক

ব্রিকলেনের দেয়ালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির শ্লোগান নিয়ে তুমুল বিতর্ক

লন্ডনে দেয়াল লিখন শিল্পের জন্য সুপরিচিত ব্রিকলেনের একটি দেয়ালে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির মতাদর্শের শ্লোগান দেখা যাচ্ছে, যা ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সপ্তাহের শেষ দিনে একদল লোক ব্রিকলেনের সাদা দেয়ালে লাল রঙ্গের স্প্রে দিয়ে চীনা ভাষায় বড় বড় করে শ্লোগানগুলো আঁকছে।

সেখানে ১২টি করে দুই অক্ষরের শব্দ দিয়ে গঠিত চীনের ‘মূল সমাজতান্ত্রিক মূল্যবোধ' লেখা হয়েছে, যা চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের শাসনামলের সবচেয়ে প্রচলিত রাজনৈতিক শ্লোগান।ব্রিকলেনের দেয়ালে এই শ্লোগান দেখা যাওয়ার পর অনলাইনে বিতর্ক শুরু হয়েছে যে এগুলোকে আসলে 'স্ট্রিট আর্ট' বা দেয়াল লিখন শিল্প হিসাবে গণ্য করা হবে কি না এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে কীভাবে রাজনৈতিক প্রচারণাকে মিলিয়ে ফেলা হয়।

তবে এই শ্লোগান দেখা যাওয়ার পর ব্রিকলেনের দেয়ালটি ভিন্ন মতাদর্শের শ্লোগান লেখার একটা জায়গা হিসাবে তৈরি হয়েছে। ওই শ্লোগানের পাল্টা হিসাবে চীনের সরকারের সমালোচনা করে নতুন গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে।আবার কেউ কেউ সেসব শ্লোগানের সামনে একটি ‘না’ যুক্ত করে দিয়েছেন। বিভিন্ন ধরনের বার্তা লিখেছেন অনেকে।কেউ কেউ বিরক্তি প্রকাশ করেছেন যে, দেয়ালে থাকা আগের গ্রাফিতিগুলো ঢেকে দিয়েছে চীনা শ্লোগান। এসব গ্রাফিতির মধ্যে একজন বিখ্যাত শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হিসাবে আঁকা কিছু গ্রাফিতি ছিল, যিনি মারা গেছেন।

চীনের রাজনৈতিক শ্লোগান ব্যবহারের রীতি চালু হয়েছিল শি জিনপিংয়ের পূর্বসূরি হু জিনতাও এর সময় থেকে। তখন প্রকাশিত সমাজতান্ত্রিক শ্লোগানগুলোর মধ্যে রয়েছে সমৃদ্ধি, গণতন্ত্র, সভ্যতা, সম্প্রীতি, স্বাধীনতা, সাম্য, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন, দেশপ্রেম, উৎসর্গ, অখণ্ডতা এবং বন্ধুত্ব।যদিও ওই শ্লোগানগুলোর কারণে অনেক নেতিবাচক মন্তব্য এসেছে, কিন্তু যারা এগুলো এঁকেছেন, তারা কি গুরুত্বের সঙ্গেই সেটা করেছেন নাকি মজা করেছেন, তা পরিষ্কার নয়।

শিল্প জগতে ই কুই নামে পরিচিত নির্মাতা ওয়াং হ্যানঝেং মনে করেন, "এগুলোর আসলে তেমন একটা রাজনৈতিক অর্থ নেই"।ইনস্টাগ্রামের একটি পোস্টে মি. ওয়াং চীনা ভাষায় লিখেছেন, যারা এগুলো লিখেছে, তারা আসলে নানা ধরনের পরিবেশে আলোচনা সৃষ্টি করার জন্য রাজনৈতিক উপাদানগুলোকে ব্যবহার করছে। তবে এই দেয়াল লিখন চীনের ভাষাভাষীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

চীনে যারা বসবাস করেন, যাদের বেশিরভাগ চীনা সরকারের পক্ষাবলম্বন করে থাকেন, তার যুক্তি দিচ্ছেন যে ব্রিকলেনে যা করা হয়েছে, তা মত প্রকাশের স্বাধীনতার একটি উদাহরণ এবং সেটা রক্ষা করা উচিত। কেউ কেউ বলেছেন, এভাবে সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় তারা গর্ব বোধ করেন।কিন্তু কোন কোন জাতীয়তাবাদী এটাও প্রশ্ন করেছেন যে, এটা কি ‘হাই-লেভেল ব্ল্যাকের’ একটি নমুনা কিনা? যারা কমিউনিস্ট পার্টির শাসনের সমালোচনা এবং ব্যাঙ্গ করে তাদের বর্ণনা করার জন্য চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যম 'হাই-লেভেল ব্ল্যাক' কথাটি ব্যবহার করে।ব্রিকলেনের দেয়ালে লেখাটির বিষয়ে চীনের ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি