চট্টগ্রামে বিদ্যুৎহীন পানিবন্দি ৬ লাখ মানুষ

চট্টগ্রামে বিদ্যুৎহীন পানিবন্দি ৬ লাখ মানুষ

সংগৃহীত

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ৬ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া জেলার ৮ উপজেলায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে অন্ধকাচ্ছন্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী।

এদিকে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ দেয়া শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি পানিবন্দি মানুষের নিরাপত্তায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৭৫৩ জনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) এমন তথ্য দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের এক লাখ ৪০ হাজার ১২টি পারিবারের ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি সব উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা। সাতকানিয়া উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, পানিবন্দি মানুষদের জন্য শুকনো খাবার এবং পানিবিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। সোমবার ও আজ (মঙ্গলবার) খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, জেলার সবকটি উপজেলায় কমবেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। ১ হাজার ১৯৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে। এখন পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১৩৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, বিভিন্ন বাধার কারণে যেসব পয়েন্টে পানি জমে আছে, সেসব বাধা সরানোর কাজ চলছে। কয়েকটি সরকারি সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিস লাইন বসানোয় নগরীতে জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এ বছর বন্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এমন বন্যা অতীতে কখনও দেখেনি চট্টগ্রামের মানুষ। ১৯৯৭, ১৯৯৮ এবং ২০১৯ সালেও বড় বন্যা হয়েছিল। এবার তারচেয়েও ভয়াবহ অবস্থা। পানিতে নিচতলা ডুবে গেছে। রাস্তায় বুক সমান পানি।

ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়, অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ার যোগ হলে শুক্রবার বন্দর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শনিবারও এসব এলাকা ছিল পানির নিচে। এদিন থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পানি বাড়তে থাকে। রোববার বন্দর নগরীর নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যায়, পানির নিচে চলে যায় সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, পটিয়া, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার বেশ কিছু এলাকা।

সাতকানিয়ার বাসিন্দা সোবাহান মিয়া বলেন, আগেও এলাকায় পানি উঠেছে। কিন্তু এরকম দ্রুতগতিতে না। এবার হঠাৎ করেই ভোরের মধ্যে এলাকার বেশির ভাগ বাড়িঘরের নিচতলা পানিতে ডুবে গেছে। সব টিউবওয়েল-মটর পানির নিচে। খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ নেই গত দু’দিন ধরে।

এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, গত ৭২ ঘণ্টায় প্রায় ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতি বৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয়েছে পাহাড়ি ঢল। পাহাড়ি নদী সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং কর্ণফুলী ও হালদার পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে দক্ষিণের সাতকানিয়া, বাঁশখালী, পটিয়া ও আনোয়ারা এবং উত্তরের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া