৭ দিন ধরে পানির নিচে কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান

৭ দিন ধরে পানির নিচে কয়েক হাজার বিঘা জমির ধান

সংগৃহিত ছবি।

ভারতীয় অংশে স্লুইচগেট বন্ধ থাকায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি মাঠের কয়েক হাজার বিঘা জমির ধানের চারা সাতদিন ধরে পানির নিচে তলিয়ে আছে। ধানের চারাগুলো ডুবে থাকায় অনেকটা ক্ষতির মুখে এলাকার কয়েকশ কৃষক।

এরইমধ্যে স্লুইচগেট খুলতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) চিঠি দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভাইগড় ক্যাম্প। উপজেলা প্রশাসনের দাবি, খুব দ্রুত সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর, হাকিমপুর, শৈলান এবং পলীখিয়ার মামুদপুর মাঠের কয়েক হাজার বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ পানি পলীখিয়ার মামুদপুর মাঠ দিয়ে ভারতীয় অংশে প্রবেশ করে। কিন্তু বৃষ্টি শুরুর পর ভারতীয় সিরামপুর এলাকায় স্লুইচগেট বন্ধ করে দেওয়ায় মাঠের পানি নামতে পারেনি।

শনিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার বেশ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠগুলো পানিতে তলিয়ে আছে। ধানের চারা দেখা যাচ্ছে না। বিলগুলো দেখতে অনেকটা বড় নদীর মতো মনে হচ্ছে।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার উপজেলায় ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।

পলীখিয়ার মামুদপুর এলাকার কৃষক পলাশ হোসেন বলেন, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আমার ১০ বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে ডুবে আছে। চারাগুলো আর দু-এক দিন থাকলে পচে নষ্টে হয়ে যাবে। আমাদের এই এলাকার বেশির ভাগ কৃষকের জমিই পানির নিচে ডুবে গেছে। সামনে কী হবে খুব চিন্তাই আছি।

দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের কৃষক অফিজ উদ্দিন বলেন, আমারা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি ভারতের সিরামপুর এলাকার মাঠে একটি স্লুইচগেট আছে। ওখানে মোট আটটি গেট আছে। সারাবছর ধরে খুলে রাখলেও বাংলাদেশের কৃষকের জমির ধান নষ্ট করতে তারা বর্ষার সময় সব গেট বন্ধ করে দেয়।

কৃষক ইউনুস আলী বলেন, এই মাঠে আমার আট বিঘা জমির ধানের চারা ডুবে গেছে। আমার চাচার ১৩ বিঘা। যদি আগামী তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে যায় তাহলে কিছুটা রক্ষা হতে পারে। আমরা স্থানীয় ভাইগড় বিজিবিকে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছি। শুনতেছি তারা নাকি বৈঠক করবে।

 

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এই এলাকার চারটি মাঠের বেশকিছু কৃষকের জমির ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বরাবরই পানিগুলো ভারতে চলে যায়। এবার তারা কেন স্লুইচগেট বন্ধ রেখেছে আমরা জানি না। তবে আমরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।

বিষয়টি এরইমধ্যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে বিজিবির ভাইগড় কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার অমরেষ কুমার বালা বলেন, দু-একদিন দেখি, এরমধ্যে যদি স্লুইচগেট না খোলে সেক্ষেত্রে আমরা তাদের (বিএসএফ) সঙ্গে বৈঠক করবো।

রামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম বলেন, কৃষি অফিসের তদন্তের পরপরই আমরা বিজিবিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তারা বিএসএফকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে। আশা করছি, দু-একদিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।