নেপালে বাংলাদেশিদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ৭

নেপালে বাংলাদেশিদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ৭

সংগৃহীত

ইউরোপের উন্নত দেশে পাঠানোর নামে মানবপাচার ও জিম্মি করার অভিযোগে নেপালে ৫ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সহায়তা করার দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন নেপালের আরও দুই ব্যক্তি। গ্রেপ্তারকৃতরা ৮ বাংলাদেশি নাগরিককে জিম্মি করেছিল।

সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়্যান টাইমস।

এতে বলা হয়, ইউরোপীয় দেশে পাঠানোর প্রলোভনে নেপালে পাচার করা আট বাংলাদেশিকে জিম্মি করার অভিযোগে পাঁচ বাংলাদেশি নাগরিক ও দুই নেপালি সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে কাঠমান্ডু ভ্যালি ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন অফিস।

গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশিরা হচ্ছেন- আমির হোসেন (৪৭), মো. মশিউর রহমান (৩৭), সেলিম মিয়া (৩৮), জাহাঙ্গীর আলম (২১) ও তাহমিনা বেগম (২১)।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত দুই নেপালি নাগরিক হচ্ছেন- তারা নেপালি (২৭) এবং রোহানি রায় (৩৩)। গ্রেপ্তারকৃত নেপালি দু’জন দেশটির সিন্ধুপালচক এবং ইলামের বাসিন্দা। নেপালে মানবপাচার চক্রকে সহায়তা করার দায়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইউরোপের কোনও একটি দেশে পাঠানোর নামে ওই আটজন বাংলাদেশি নাগরিককে বাংলাদেশ থেকে প্রথমে নেপালে পাঠানো হয়। এরপর নেপালে তাদের জিম্মি করে অভিযুক্তরা। পরে আবু বকর সিদ্দিক নামে ওই আট বাংলাদেশি জিম্মির একজন পাচারকারীদের খপ্পর থেকে পালিয়ে ভৃকুটিমন্ডপের ট্রাফিক পুলিশ অফিসে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

নেপালি সংবাদমাধ্যম দ্য হিমালয়্যান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা তাদের স্বপ্নের দেশে যাওয়ার আশায় দিন গুনছিল। তবে পণবন্দি করে পাচারকারীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে আরও টাকা দাবি করতে শুরু করার পর তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। এমনকি বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তাদের হত্যার হুমকিও দে য়া হয়। বাংলাদেশিদের পণবন্দি করে রাখার খবর পেয়ে কালিমাটিদোলের একটি গেস্ট হাউস থেকে চার জিম্মিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ভুক্তভোগী এই বাংলাদেশিদের আমির হোসেন নামে এক পাচারকারীর ভাড়া করা কক্ষে রাখা হয়েছিল।

আমিরের গ্রেপ্তারের পর অন্য অপরাধীদের পরিচালিত হরিসিদ্ধিভিত্তিক একটি ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে আরও দুই বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয় এবং কেটিসি বিউটি পার্লার অ্যান্ড স্পা নামে পরিচালিত নকশাল-ভিত্তিক ম্যাসাজ সেন্টার থেকে আরও দুই বাংলাদেশি নারীকে উদ্ধার করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জিম্মি এসব বাংলাদেশির পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ আদায় করেছে পাচারকারীরা। ব্যাংকের মাধ্যমে এসব টাকা বাংলাদেশ থেকে নেপালে পাঠানো হয়।